যে কারণে বাতিল হলো আরব আমিরাতের বিশেষ ফ্লাইট
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষায় ছয় প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত। ফলে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুবাইগামী অ্যামিরাত এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম তৌহিদুল আহসান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতায় এ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।’
বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রবাসী বা বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা কবে নাগাদ চালু হচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখনও আমরা প্রবাসীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও টেকনোলজিস্টদের নমুনা পরীক্ষা করিয়েছি। সিভিল অ্যাভিয়েশান থেকে এখনও প্রবাসীদের পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত দেয়নি। যখন আমরা নমুনা পরীক্ষার অনুমতি পাব, তারপর থেকে ফ্লাইট শুরু হবে।’
‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাত্রীর যাত্রা শুরুর ছয় ঘণ্টা আগে পরীক্ষা করার কথা জানিয়েছে দেশটি। ফলে পরীক্ষা না করে তাদেরকে আরব আমিরাত গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। সেজন্য স্থগিত করা হয়েছে ফ্লাইট।’
এর আগে গত রোববার প্রবাসীকর্মী ও যাত্রীদের দ্রুততম সময়ে করোনা পরীক্ষা করতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির কার্যক্রম শুরু করে। এ দিন সকাল থেকে ছয় প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। যদিও এই কার্যক্রম গত শনিবার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ রোববার বলেছিলেন, ‘আজ থেকে টেস্ট ট্রায়াল শুরু করা হয়েছে। মোট ছয়টি প্রতিষ্ঠান বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা করবে। ওই ছয় প্রতিষ্ঠানের মোট ১৮ জনের নমুনা আজ নেওয়া হয়েছে। তারাই করোনা পরীক্ষার কাজে যুক্ত থাকবেন। তাদের দিয়ে ট্রায়াল শুরু করা হচ্ছে, কারণ তারা যদি আক্রান্ত থাকেন, সেটা বিপদের হবে। ফলে আগে তারা নিরাপদ কিনা তা দেখা হচ্ছে।’
‘এই নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেলে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাব, আমাদের ল্যাব সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করবেন। তবে এটি কবে থেকে হবে, এখনই বলা যাচ্ছে না’, যোগ করেন সাজ্জাদ।
শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেছিলেন, ‘শনিবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে ল্যাবগুলো চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান ও বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যদের কিছু পর্যবেক্ষণ থাকায় আজ সকাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ল্যাবগুলো চালু করা হয়েছে।’
গত রোববারের তথ্য, করোনা পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাইরোলজিস্টেরা বিমানবন্দরে হাজির হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—স্টেমজ হেলথকেয়ার (বিডি) লিমিটেড, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।
করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিমান যোগাযোগ শুরু হলেও ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টার মধ্যে র্যাপিড পিসিআর টেস্ট করে ফল নেগেটিভ আসতে হবে—এমন শর্ত আরোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ ছাড়াও আমিরাতে প্রবেশের পর আবারও করোনা পরীক্ষা করা হবে। আমিরাতের দেওয়া ছয় ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার শর্তের জন্য বাংলাদেশে আটকে যান প্রায় সাত হাজার প্রবাসী।