গাজীপুরে সাবেক স্ত্রীর ঘরে গার্মেন্টসকর্মীর ঝুলন্ত লাশ
গাজীপুরে এক গার্মেন্টসকর্মীর ঝুলন্ত লাশ তার সাবেক স্ত্রীর ঘর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় একই ঘর থেকে আহতাবস্থায় তার সাবেক স্ত্রী আমেনাকে (১৮) উদ্ধার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেলার চান্দনা গ্রামের হাজি শহিদুল ইসলামের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়।
নিহত নূরে আলম (২২) নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার নলঝুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। জিএমপি’র বাসন থানার ওসি মোঃ মালেক খসরু খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের বড় বোন ময়না আক্তার জানান, প্রায় দুই বছর আগে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার খলিল মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমকে (১৯) প্রেম করে বিয়ে করেন তার ভাই নূরে আলম। তারা একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। বিয়ের পর স্ত্রী আমেনাকে নিয়ে গাজীপুরের চান্দনা এলাকায় শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে হাজি শহিদুল ইসলামের বাড়িকে ভাড়া থাকতেন আলম। কিছুদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ অক্টোবর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে নূরে আলম ওই কারখানার চাকরি ও বাসা ছেড়ে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।
বাড়ির মালিক হাজি শহিদুল ইসলাম ও স্থানীয়রা জানায়, গতকাল সন্ধ্যার পর কারাখানা ছুটি শেষে আমেনা বাসায় ফিরে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই বোরকা ও হাতে পায়ে মোজা পরিহিত একজন আমেনার ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে বাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কারো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে মিস্ত্রি এনে দরজা কেটে ঘরে প্রবেশ করে এবং সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় নূরে আলমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এ সময় ঘরের ভেতর থেকে আমেনাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত আমেনার শরীরে ক্ষতচিহ্ন ও পরনের কামিজ ছেড়া ছিল।
জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মালেক খসরু খান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নূরে আলমই বোরকা ও হাত-পায়ে মোজা পড়ে সাবেক স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করে আমেনাকে মারধর করে। এ সময় আমেনা মারা গেছে ভেবে নুরে আলম নিজেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।