আশুলিয়ায় ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় আসবাবপত্র তৈরির কারখানার কর্মচারী রমজান মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
নিহত রমজান মিয়া (১৯) ছিলেন নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তাঁর খালার সঙ্গে আশুলিয়ার জামগড়ার মোল্লাবাজার এলাকার ভাড়া থেকে শিমুলতলার ‘দি ভাই ভাই ফার্নিচার’ নামের একটি দোকানে কাজ করতেন।
আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১ অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ার পলমল পোশাক কারখানার সামনে রমজান মিয়াকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। ৯৯৯-এর মাধ্যমে থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে রমজানকে গুরুতর আহত অবস্থায় নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত রমজানের খালা মোসাম্মৎ কুলসুম বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে করেন।
এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে তা সিআইডির নজরে আসে। সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তা ধর আরও জানান, তাঁর তত্ত্বাবধায়নে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ ও গভীরভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁর নির্দেশে এলআইসির একাধিক চৌকস টিম দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে আসামি আমিনুলকে জামগড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার মুগদা থেকে সাগর মোল্লা এবং মো. ইউনুছকে আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে মৃতের ব্যবহৃত লুণ্ঠিত মোবাইল এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তা ধর আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করে যে, তারা মূলত সক্রিয় ছিনতাইকারী দলের সদস্য। ঘটনার দিন রমজান মিয়ার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আসামিরা ছুরি দিয়ে রমজানের বুকে, পেটে এবং রড দিয়ে গলায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়।
অতি অল্প সময়ের মধ্যে এমন চাঞ্চল্যকর ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা সিআইডি এবং বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।