খুলনায় অপহরণের ৫৮ ঘণ্টা পর কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার
খুলনার পাইকগাছায় কলেজছাত্র আমিনুরকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের তিনদিন পর কপোতাক্ষ নদের চর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পরে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আমিনুর কপিলমুনি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
এর আগে গত সোমবার আটক হওয়া ঘাতক ফয়সালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কপোতাক্ষ নদে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েও লাশ উদ্ধার করা যায়নি। এর আগে ৯ নভেম্বর ছেলে হত্যার অভিযোগে আমিনুরের বাবা ছুরমান গাজী আটক ফয়সালকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
এদিকে খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে মামলার একমাত্র আসামি ফয়সাল।
এর আগে ঘটনার একমাত্র আসামি ফয়সালের ফাঁসির দাবিতে পরিবারের পাশাপাশি এলাকাবাসী গতকাল মঙ্গলবার সকালে এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
গত ৭ নভেম্বর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের ছুরমান গাজীর ছেলে ও আমিনুর রহমানকে পার্শ্ববর্তী গদাইপুর গ্রামের ফয়সাল মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে।
এরপর আমিনুরের ব্যবহৃত ফোন দিয়ে ওইদিন রাত ১০টার দিকে তাঁর বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা পাইকগাছা ব্রিজের নিচে রাখতে বলে অপহরণকারী। এরপর অপহৃত আমিনুরের বাবা ছুরমান গাজী তাঁর কথামতো দাবির কিছু টাকা নির্দিষ্ট স্থানে রাখেন। তবে ঘটনাস্থলে টাকা রেখে বিষয়টি নজরদারিতে থাকা পুলিশ ফয়সালকে সেখান থেকে টাকা নিয়ে ফেরার সময় আটক করেন।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, সকালে ঘটনাস্থলের প্রায় তিনশ গজ দূরে নদীর চরে আটকে থাকা অবস্থায় নিহত আমিনুরের লাশ উদ্ধার হয়। এর আগে ফয়সালকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করেন। আমিনুরকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করে তাঁর লাশ কপোতাক্ষ নদীতে ফেলে দেয় বলে জানায়। পুলিশ স্বীকারোক্তি মোতাবেক গত সোমবার দুপুরের পর তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তের দাগ পাওয়ার পর লাশ উদ্ধারে কপোতাক্ষে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করা হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফয়সাল জানায়, তাঁর কথিত প্রেমিকার মোটরবাইক কেনার আবদার রক্ষা করতে তিনি আমিনুরকে অপহরণ করে তাঁর বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। তবে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তিপণ পাওয়ার আগেই আমিনুরকে হত্যা করা হয়।
তবে হত্যাকাণ্ডে ফয়সালের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি ফয়সাল।