সিনহা হত্যা মামলার ৭ম দফায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ
কক্সবাজারে আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ৭ম দফায় দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার আরও একজনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে ওই মামলায় ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমালের আদালতে টানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। সকালে মামলার অন্যতম সাক্ষী সহকারী পুলিশ সুপার মো. জামিলুল হককে জেরার মধ্য দিয়ে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরে দিনব্যাপী মামলার আরেক সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি খাইরুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ অসমাপ্তির মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শেষ হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম।
পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, ‘মামলার সাক্ষীগ্রহণের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। আজ সহকারী পুলিশ সুপার মো. জামিলুল হক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি খাইরুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রয়েছে। এ মামলায় আজ পর্যন্ত ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।’ তিনি জানান, আগামীকাল এএসপি খাইরুল ইসলামের অসমাপ্ত সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ওসি প্রদীপসহ এই মামলার ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আদালতে নিয়ে আসা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে।
এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিদে মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।