মানসিক প্রতিবন্ধীর জন্ম দেওয়া নবজাতকের ঠাঁই হলো হাসপাতালে
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মানসিক প্রতিবন্ধী মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া এক নবজাতকের ঠাঁই হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গতকাল বুধবার রাতে প্রসবের পর নবজাতকটিকে নিজেদের জিম্মায় নিতে তিন নারীর কাড়াকাড়ির ঘটনা শুনে পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে রেখে আসে।
বর্তমানে নবজাতকটি ভালো আছে জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিশুটিকে কোনো শিশু নিবাসে না পাঠানোর আগ পর্যন্ত এখানেই থাকবে।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহাম্মেদ বিশ্বাস জানান, গতকাল রাতে রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে ওই মানসিক প্রতিবন্ধী নারী একটি বাচ্চা প্রসব করেন। সদ্যজাত ওই শিশুকে নিজের জিম্মায় নিতে টানা হেঁচড়া করে তিন নারী। তারা নবজাতকটির লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে চান। এ নিয়ে ঝগড়ার খবর পেয়ে নারীদেরসহ শিশুটিকে থানায় নিয়ে আসি। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে জানালে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জিম্মায় দিয়ে আসতে বলেন।
কমলপুর নিউটাউন এলাকার শারমিন বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর জন্ম দেওয়া বাচ্চাটি নিয়ে দুজন ভবঘুরে নারী টানাটানি করছে দেখে আমি সেখানে যাই। তাদের বলি তোমরা তো বাচ্চাটি নিয়ে বিক্রি করে দেবে। আমাকে দাও, আমি লালন পালন করব। আমার দুইটি ছেলে সন্তান থাকলেও কোনো মেয়ে নাই। তখন তাদের কাছ থেকে বাচ্চাটি নিয়ে রেলওয়ে পুলিশের কাছে যাই। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে আসি। চিকিৎসকরা দেখেছেন। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে বাচ্চাটি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দেবারতি দাস বলেন, ‘পুলিশের সহায়তায় এক নারীর নিয়ে আসা শিশুটিকে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। শিশুটি বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ আছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ঘটনাটি রেলওয়ে থানার ওসি আমাকে জানানোর পর শিশুটিকে হাসাপাতালে রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো শিশু নিবাসে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’