রিয়াদ দূতাবাসে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত
‘দক্ষ হয়ে প্রবাসে যাই, অর্থ ও সম্মান দুই কামাই’, ‘নিরাপদ অভিবাসন, নিরাপদ রেমিট্যান্স’—এমন সব নীতিবাক্য প্রচার করে সৌদি আরবের রিয়াদ দূতাবাসে বিশ্ব অভিবাসন দিবস-২০১৯ পালিত হয়েছে। দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের আয়োজনে এবার দূতাবাসের নিজস্ব মিলনায়তনে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ বছর ধরে সৌদি অভিবাসী একজনকে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ নিজের আসনে বসিয়ে উপস্থিত সব প্রবাসীকে সম্মান দেখানোয় করতালি দিয়ে রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
বিশ্ব অভিবাসন দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমিও কর্মজীবনের শুরুতে লন্ডনপ্রবাসী ছিলাম। দূতাবাসের গেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে দূতাবাসে ঢুকেও কোনো কর্মকর্তার সাক্ষাৎ পাইনি। অতীতের শিক্ষা নিয়ে আমি প্রবাসীদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছি। ২৫ লাখ প্রবাসীর দেশের দূতাবাসের গেটে আজ এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একজন প্রবাসী ও শ্রমবান্ধব মানুষ ও প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অবদানে আজ রিয়াদ দূতাবাসের নান্দনিক ভবন ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। আজ প্রচণ্ড শীতের মধ্যে অভিজাত সিনেপ্লেক্স অডিটরিয়ামে আপনাদের সমাদর করতে পেরেছি। আপনাদের পাঠানো টাকায় দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। দেশের প্রধান প্রবৃদ্ধির খাত প্রবাসী রেমিট্যান্স খাত।’
রিয়াদ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মেহেদি হাসানের সঞ্চালনা ও উপস্থাপনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও রিয়াদ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান (ডিসিএম) ড. মো. নজরুল ইসলাম, নবনিযুক্ত ডিসিএম মিনিস্টার আনিসুল হক, কার্যালয় প্রধান ও মিনিস্টার ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদ সিদ্দিকি।
শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. আসাদুজ্জামান দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন অপর প্রথম সচিব মো. বেল্লাল হোসেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রেস উইংয়ের প্রথম সচিব মো. ফখরুল ইসলাম, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর বাণী ও প্রবাসীকল্যাণ সচিবের বাণী পাঠ করেন আরেক প্রথম সচিব মো. শফিকুল ইসলাম।
অভিবাসী সভায় শ্রম কাউন্সিলর মেহেদি হাসান বলেন, ‘রিয়াদ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিল শাখা বিগত দিনের মতো নেই। এখন প্রতিদিনের কাজকর্ম প্রতিদিন আপডেট রিপোর্ট মনিটরিং করা হয়। ২৪ ঘণ্টা মোবাইল ফোন খোলা রাখা হয়। আগের তুলনায় নির্যাতিত গৃহকর্মী সেইফ হাউসে অনেক কমেছে। প্রবাসীদের মৃতদেহ দ্রুত পাঠানো, আইনি সহায়তাসহ প্রবাসীদের সব ধরনের সেবা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশে জনশক্তি রপ্তানি খাত কঠোর মনিটরিংয়ে নিরীক্ষণ করা হয়।’
বাহরাইনের রাষ্ট্রদূত ও ডিসিএম ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসী ও শ্রমবান্ধব এবং উন্নয়নমুখী সরকার। ৩৬ বছর ধরে সৌদি আরবের কূটনৈতিক এলাকায় দূতাবাস করার জন্য বাংলাদেশকে দিয়ে রেখেছে সৌদি সরকার। ত ২৮ বছর অন্য সরকারগুলো দূতাবাস ভবন করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাত্র দুই বছরের মধ্যে ৬০ কেটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ২৫ লাখ সৌদি প্রবাসীর জন্য দূতাবাস ভবন নির্মাণ করেন। গত পাঁচ বছরে ছয়বার তিনি সৌদি আরব আসেন। নতুন নতুন চুক্তি ও সৌদি আরবের বিনিয়োগ বাংলাদেশে করিয়েছেন বর্তমান রাষ্ট্রদূত।’
সভায় ডিসিএম ও মিনিস্টার আনিসুল হক ও ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদ সিদ্দিকি বক্তব্য দেন। সভা শেষে দূতাবাসের শ্রম শাখা-২০২০ সালের ক্যালেন্ডার, প্রবাসীদের সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন প্রবাসীদের মধ্যে।