ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত
যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমেরিকিার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ৪৬তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ৪৬তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হয়।
১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সংগ্রামে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করে। এ দিনটির স্মরণে প্রতিবছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
এ উপলক্ষে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট গ্লোবাল পলিসি অ্যান্ড পার্টনারশিপের ডেপুটি ডাইরেক্টর যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুবি সি হেগভেট। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রতিরক্ষা অ্যাটাচি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, এনডব্লিউসি ও পিএসসি অনুষ্ঠানে আসা আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুবি সি হেগভেট তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে অপারেশন ডেজার্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ এই সম্পর্ককে আরো গভীরতম করেছে। তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ যৌথ সামরিক মহড়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দুই দেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণ এবং হারিকেন ক্যাটরিনার সময় বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, দুই দেশের জনগণের মধ্যেও সুসম্পর্ক বজায় আছে যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন, ভোটার রেজিস্ট্রেশন এবং কম্পিউটারাইজড জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহুলাংশে উজ্জ্বল করেছে।
স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে ৪৬তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মিসেস জিয়াউদ্দিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুবি সি হেগভেট ও তাঁর স্ত্রীকে উপহার প্রদান করেন। পরে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের মধ্যে বাংলাদেশি রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, প্রতিরক্ষা অ্যাটাচি, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও পেন্টাগনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মিডিয়া প্রতিনিধি, বিভিন্ন দূতাবাসের সামরিক অ্যাটাসে, কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।