অস্ট্রেলিয়ায় স্মরণকালের রেকর্ড গড়া বৈশাখী উৎসব
অস্ট্রেলিয়ায় উদযাপিত হয়ে গেল স্মরণকালের রেকর্ড গড়া বৈশাখী উৎসব। সিডনিতে হওয়া বাংলা নববর্ষ উদযাপনের এ উৎসবে এবারই সর্বাধিক ২০ হাজার অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন।
গত শনিবার সিডনির ফেয়ার ফিল্ড শো গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত ওই বৈশাখী উৎসব পালিত হয়।
ওই দিন সন্ধ্যা নাগাদ পুরো ফেয়ার ফিল্ড সিটি যেন পরিণত হয় এক টুকরো বাংলাদেশে। সিডনি ছাড়াও অন্যান্য রাজ্য থেকে প্রবাসীরা এ মেলায় যোগ দেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য দিন দিন এটি হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় মিলনমেলা।
মেলায় আসা দর্শনার্থীদের গানে গানে মাতিয়ে রাখেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হাবিব ও ফেরদৌস ওয়াহিদ। মাঝরাত পর্যন্ত দর্শকদের সুরে বুঁদ করে রাখেন তাঁরা। ছোট শিশু-কিশোরদের আনন্দ আর নাচগানে পুরো মাঠ ছিল আনন্দমুখর।
এবারে মেলায় বাড়তি আয়োজন হিসেবে ছিল ফায়ার ওয়ার্কস। এ উপলক্ষে সিডনির আকাশে একটানা ১৫ মিনিট ধরে আতশবাজি চলতে থাকে।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের অংশগ্রহণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা পর্ব সঞ্চলনা করেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী ও গবেষক সিরাজুল হক।
এত এত লোকসমাগমে আনন্দিত মেলা কমিটির আহ্বায়ক গাউসুল আলম শাহজাদা বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি অন্তত একটি দিন যেন দল-মত নির্বিশেষে সব প্রবাসী বাংলাদেশি এক জায়গায় জড়ো হয়ে আনন্দ করতে পারি। আজ মনে হয়, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সার্থক হয়েছে।’
লাকেম্বা উপশহর থেকে সন্তানদের সঙ্গে করে মেলায় আসা দর্শনার্থী মোর্শেদ রওশন সরকার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার সন্তানের আজকের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছে, আমার এখানে আসাটা সার্থক হয়েছে।’
কার্লটন থেকে মেলায় উপস্থিত সদ্যবিবাহিত আরেফিন দম্পতি। মেলার অনুভূতি জানাতে গিয়ে ফাহিমা আরেফিন বলেন, ‘আমাদের দুজনের জব থেকে ছুটি নিয়ে আমরা এসেছি বৈশাখী মেলায়। কিন্তু এত বড় আয়োজন দেখে, বিশেষ করে দেশি খাবার, বিভিন্ন জুয়েলারি স্টল দেখে এখন বাসায় যেতে মন চাচ্ছে না। তা ছাড়া হাবিব আমার প্রিয় শিল্পী, তাই যতক্ষণ কনসার্ট থাকবে আমরা উপভোগ করব।’
সব মিলিয়ে এবারের আয়োজনে অনেক খুশি ছিলেন দর্শনার্থীরা। পর্যাপ্ত পার্কিং থাকায় কোনো ধরনের ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই সবাই গাড়ি পার্ক করতে পেরেছেন।
তবে অনুষ্ঠানের মঞ্চ কিছুটা অগোছালো ছিল বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া মাঠ কিছুটা স্যাঁতসেঁতে থাকায় মহিলাদের শাড়ি ও জুতা কাদায় মেখে যাওয়ায় কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
যদিও সেই ক্ষোভের আগুনে পানি ঢেলে সবাইকে মাতিয়ে রাখে হাবিব ও ফেরদৌস ওয়াহিদের গান। পরের দিন রোববার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মাঝরাত পর্যন্ত পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।