মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে চলতি মাসেই বৈঠক
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার শিগগিরই উন্মুক্ত হবে বলে উভয় দেশ আশাবাদ ব্যক্ত করে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে। এ নিয়ে চলতি মাসেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদমন্ত্রী তান কুলাসেগারানের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের রয়াল চুলান হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বৈঠকের ব্যাপারে কথা বলেন ইমরান আহমদ।
প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, ওই বৈঠকে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আগামী ৩০ ও ৩১ মে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
ইমরান আহমদ আরো বলেন, ‘বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার শিগগিরই উন্মুক্ত হবে বলে উভয়পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে। এ ছাড়া বৈঠকে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে অর্থবহ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে উভয়পক্ষই মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা অনিয়মিত বিদেশি কর্মীদের হয়রানি ও বঞ্চনার শিকার হওয়াসহ নানা সমস্যা দ্রুত সমাধানের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।’
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী জানান, বৈঠকে বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থরক্ষাসহ দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, নিরাপদ অভিবাসন, কর্মীদের নিরাপদ অবস্থান, নিরাপদ কর্ম, বেতন ও বিমা, অবৈধদের বৈধতা এবং যারা স্বেচ্ছায় দেশে যেতে চায়, তাদের সহজ প্রত্যাবর্তন বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। এসব বিষয় কার্যকর করার জন্য এ মাসেই উভয় দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে।
ইমরান আহমদ আরো জানান, গত বছর একতরফা ও অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে। এই ১০ এজেন্সি সিন্ডিকেট হিসেবে পরিচিতি পায়। এর সঙ্গে জড়িত দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি লোকজন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেয়ে বাজার চালু করার জন্য এখন সরকারের মনোযোগ বেশি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহ. শহীদুল ইসলাম, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহিন, উপসচিব আবুল হোসেন, দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, প্রথম সচিব (শ্রম) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল, প্রথম সচিব তাহমিনা ইয়াছমিনসহ মালয়েশিয়ার মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।