সিউলে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে দ্বিতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে বালাদেশি চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে সিউলের ইয়ংসান-গু আর্ট হলে গত মঙ্গলবার তিন দিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হয়েছে।
উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোরিয়া-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসেশিনের চেয়ারম্যান কিম কিসন, এম পি এবং ইয়ংসান কাউন্টির মেয়র জাং-হিয়ুন সুং। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনীতিক, কোরিয়ান গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিপুল কোরিয়ান নাগরিক উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, উৎসবের জন্য নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো সমসাময়িক বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামো ও সংস্কৃতির প্রতিফলন। তিনি সবাইকে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উপভোগের আহ্বান জানান।তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই উৎসব উভয় দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তিনি এই উৎসব আয়োজনে বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলামের সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। যার আকস্মিক অসুস্থতার কারণে উৎসবে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইয়ংসান কাউন্টির মেয়র জাং-হিয়ুন সুং প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর বক্তব্যে এই চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসকে অভিনন্দন জানান। তিনি উভয় দেশের মধ্যে কোরিয়ার ভাষা সংগ্রামের ক্ষেত্রে যে সাদৃশ্য রয়েছে তা তুলে ধরেন। এ ছাড়া তিনি মাতৃভাষা দিবস (একুশে ফেব্রুয়ারি) ও হাঙ্গুল ডে (০৯ অক্টোবর, কোরিয়ান ভাষা দিবস) নিয়ে বাংলাদেশি এবং কোরিয়ানদের বিশেষ আবেগের কথাও উল্লেখ করেন। এই উৎসব বাংলাদেশি ও কোরিয়ানদের মধ্যে আত্মার মেলবন্ধন ঘটিয়ে অন্যান্য ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার পথকে আরো সুগম করবে এই মর্মেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি ।
অপর প্রধান অতিথি কোরিয়া-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কিম কিসন এম পি বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরালো করতে অসামান্য ভূমিকা রাখবে। তিনি বিগত বছরের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের কথা স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাদৃশ্য রয়েছে ।
অতিথিদের বক্তব্যের পর রাষ্ট্রদূত, প্রধান অতিথি, কোরিয়ান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, কোরিয়ান ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর সেক্রেটারি জেনারেল এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা ফিতা কেটে এই উৎসবের জমকালো উদ্বোধন করেন। এরপর উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে অনম বিশ্বাস পরিচালিত দর্শক নন্দিত চলচিত্র ‘দেবী’ প্রদর্শনের পর একই দিন মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া উৎসবের বাকি দিনগুলোতে ১১ জন তরুণ পরিচালক নির্মিত ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ এবং রোবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ চলচ্চিত্র দুটিও প্রদর্শন করা হয় ।
কোরিয়ার দর্শকদের সুবিধার্থে চলচ্চিত্রগুলোতে কোরিয়ান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় কোরীয় ভাষায় সাব টাইটেল সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের মূল কথা কোরিয়ার সংস্কৃতিতে সেতুবন্ধন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আয়োজক সংস্থা।