হজ আনুষ্ঠানিকতার প্রথম দিনে পবিত্র কাবা ঘিরে হাজিদের ভিড়
সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র কাবা ঘরে ভিড় করছেন হাজিরা। ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কাবা ঘরের চারপাশে হাঁটছেন তাঁরা। পরে আছেন সাদা কাপড়। সাদায় সাদায় প্রচ্ছন্ন যেন চারদিক। করোনাভাইরাসের অতিমারির পরবর্তী সময়ে এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষ হজ পালন করবেন বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার (২৫ জুন) এসব তথ্য তুলে ধরেছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আজ শুরু হয়েছে। ইসলাম ধর্মের অন্যতম স্তম্ভ হজ পালনে ইতোমধ্যে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন হাজিরা। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরে বিশ্বের ১৬০ দেশের ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ পালন করবেন। এর মধ্যে ১৬ লাখ বিদেশি শুক্রবারের মধ্যেই দেশটিতে পৌঁছেছেন।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়, তাহলে এই বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ যাত্রার সাক্ষী হব।’ নামপ্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চলতি বছরে ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে পারেন।’
প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছেন, আজ ফজর নামাজ বাদে কাবা ঘর তাওয়াফের মাধ্যমে হজ শুরু হয়। পবিত্র হজ পালনে সৌদি এসেছেন মিসরের ৬৫ বছর বয়সী নাগরিক আবদেল-আজিম। আজ সকালেই কাবার তাওয়াফ করেন ষাটোর্ধ্ব এই পুরুষ। এই মিসরীয় বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো দিনগুলো আমি কাটাচ্ছি। ২০ বছর ধরে টাকা জমিয়ে হজের ফি বাবদ ছয় হাজার ডলার দিয়েছি।’
ইসলাম ধর্মে যে পাঁচ স্তম্ভ রয়েছে এর মধ্যে হজ অন্যতম। সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন অবশ্যকর্তব্য।
ইসলামি বর্ষপঞ্জির শেষ মাস জিলহজ্জের ৮ তারিখ থেকে হজ শুরু হয়, যা চলে ১২ তারিখ পর্যন্ত। এ চারদিনে অনেকগুলো রীতিনীতি মানতে হয় হাজিদের। আজ রাতে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন হাজিরা। সেখান থেকে আরাফার ময়দানে যাবেন তারা। এই আরাফার ময়দানেই বিদায়ী হজের ভাষণ দিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.)।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তাঁবুর শহর মিনা। হাজিদের গ্রহণের জন্য প্রস্তুত শহরটি। হাজিদের খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে শহরটি জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এএফপি আরও জানিয়েছে, হাজিদের জন্য গ্র্যান্ড মসজিদের বাইরের ফুটপাতকে রঙিন কার্পেটের মাধ্যমে সুসজ্জিত করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স, মোবাইল ক্লিনিক ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও রাখা হয়েছে।
হজ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ইন্দোনেশিয়ার ২৫ বছর বয়সী যুবক ইউসুফ বুরহান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি আমার অনুভূতি বর্ণনা করতে পারছি না। এটি মহান সৃষ্টিকর্তার রহমত। এই বছর আমি হজ করতে পারব, এমনটি ভাবতেই পারিনি।’