শতবর্ষী খিরসীন জামে মসজিদ

আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যের স্থাপনা খিরসীন জামে মসজিদ। নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্ব দিকে মাতাজিরোডের ঘোষনগর ইউনিয়নের খিরসীন গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটি। সম্পূর্ণ চুন-সুরকির মসজিদটি গরমের সময় ঠান্ডা আর শীতের সময় গরম থাকে।
নকশায় তৈরি অপরূপ এই মসজিদ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন দর্শনার্থীরা। মসজিদের জমির ১৭ শতকের মধ্যে ৫ শতকের উপরে তৈরি মসজিদটি আয়তনে ছোট হলেও এর স্থাপত্যশৈলী ও গঠন দৃষ্টিনন্দন। মসজিদের পিছনে রয়েছে চৌধুরী বংশের পারিবারিক কবরস্থান। দশটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। যার উপরিভাগ কলসি দিয়ে কারুকার্যে মন্ডিত। মসজিদের ভিতরে ঢোকার দরজা রয়েছে পাঁচটি। প্রাচীন মসজিদটি সম্পূর্ণ চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
১৩১৩ সালে সামসুল হক চৌধুরী ও কলম উদ্দিন চৌধুরী ভারতের কলকাতা ও মুর্শিদাবাদ থেকে ২০ জন রাজমিস্ত্রি এনে এই মসজিদটির কাজ শুরু করেন। চুন ও সুরকি দিয়ে তিন বছর টানা কাজ করার পরে সুন্দর নকশি গাঁথা কারুকার্য মসজিদটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়। এই মসজিদে ৩০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদের ইমাম রুবেল হোসেন জানান, এই মসজিদে প্রায় ১৭ বছর ধরে চাকরি করছি। এই এলাকার মধ্যে সবচাইতে পুরাতন এই মসজিদ। আজও ঠিকে আছে এই মসজিদ। বহু দূর থেকে এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদ দেখতে আসে অনেক মানুষ।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান চৌধুরী জানান, এই মসজিদ ১১৮ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। আমার বাবা এই মসজিদ তৈরি দেখেছেন। কলকাতার মিস্ত্রি এই মসজিদের ফুল তৈরির কাজ করেছিল।
অসাধারণ ও অনন্য নির্মাণশৈলীর ১১৮ বছরের খিরসীন মসজিদটি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে। প্রয়োজনীয় পুনঃসংস্কার ও আধুনিকায়ন হলে মসজিদটি দর্শনার্থীদের কাছে হয়ে উঠবে আরও আকর্ষণীয়।