সূচক পতনে শীর্ষ দশের দখলে ২৮ শতাংশ লেনদেন
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক পতনে পার করল গত সপ্তাহ। সপ্তাহটিতে পুঁজিবাজারে মূলধনসহ কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। শীর্ষ ১০ কোম্পানির দখলে রয়েছে ২৮ শতাংশ লেনদেন।
ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, আগের সপ্তাহ থেকে বিদায়ি সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৮০৮ কোটি টাকা। বাজারে মূলধনের পরিমাণ কমেছে সাত হাজার ৯৫ কোটি টাকা। মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। আর শীর্ষ ১০টি কোম্পানির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৫৬৭ কোটি টাকা।
গত ১০ অক্টোবর পুঁজিবাজারে সরকারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। এরপর ডিএসইতে ২৫০ বন্ডের লেনদেন হয়। এতে ডিএসইর শেয়ারবাজার মূলধন ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা বেড়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছিল। এরপর গত ২৭ অক্টোবর শেয়ারবাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছিল সাত লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজার মূলধন দাঁড়ায় ছয় লাখ ৯২ হাজার ৫৪০ কোটি চার লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারে শেয়ারবাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছিল ছয় লাখ ৯৯ হাজার ৬৩৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মূলধন কমেছে সাত হাজার ৯৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯৮৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৭৯৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৬৯৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪১২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৩৩টির, দর কমেছে ২২৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির। লেনদেন হয়নি ১৭টি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহে প্রধান সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৯৪১ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ছয় দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৯৩ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ছয় দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫৭ দশমিক ৭২ পয়েন্টে।
গেল সপ্তাহে লেনদেন শীর্ষ ১০টির ৫০ শতাংশ লেনদেন ‘বি’ ক্যাটাগরির দখলে। এছাড়া ৩০ শতাংশ ‘এ’ ক্যাটাগরি এবং ২০ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার অবস্থান করেছে। গেল সপ্তাহে এই ১০টি কোম্পানি লেনদেন হয়েছে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ‘বি’ ক্যাটাগরির গোল্ডেন সনের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই মোট শেয়ারের লেনদেন হয় ৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এদিকে গেল সপ্তাহের শেষে (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১২ দশমিক ১৫ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহের শেষে (বৃহস্পতিবার) পিই রেশিও দাঁড়িয়েছিল ১২ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির পিই রেশিও ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। সেই হিসেবে গত বৃহস্পতিবারের ডিএসইর পিই রেশিও হিসাবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।