নেইমার-মার্সেলোবিহীন ব্রাজিলের সামনে মেসির আর্জেন্টিনা

ফুটবলবিশ্বে বহুল কাঙ্ক্ষিত এক লড়াইয়ের নাম ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ। সারা বিশ্বের ক্রীড়াপ্রেমীদের চোখ থাকে এই দুটি দেশের ওপর। ভক্ত-সমর্থকদের জিভে জল আনা এই লড়াইটি 'সুপার ক্ল্যাসিকো' বলে অভিহিত। আজ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বসছে হলুদ ও সাদা-আকাশি জার্সির লড়াই। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।
ক্রিকেটবিশ্বে ভারত-পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দ্বৈরথ আগের মতো উত্তেজনা না ছড়ালেও ফুটবলে এখনো আগের রোমাঞ্চ ধরে রেখেছে সেলেসাও-আলবাসিলেস্তের লড়াই। যদিও ফুটবলীয় শক্তিতে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল এখন আর ততটা ক্ষমতাধর নয়, তারপরও ফুটবলপ্রেমীদের কাঠে এখনো এ দুই দেশের লড়াই আলাদা মাহাত্ম্য বহন করে।
তবে যাঁরা নেইমার ও মেসির দ্বৈরথ দেখবেন ভাবছিলেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ, এই ম্যাচে ব্রাজিল তাদের মূল তারকা নেইমারকে ছাড়াই মাঠে নামছে। আসলে দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ তারকাকে ছাড়াই মাঠে নামবে দুই দল। ৩ জুন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ ও জুভেন্টাস। এ কারণে রিয়ালের দুই তারকা মার্সেলো ও ক্যাসেমিরোকে টানা না খেলিয়ে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জুভেন্টাসের হয়ে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডিফেন্ডার দানি আলভেজকেও রাখা হয়নি হলুদ জার্সিধারীদের দলে। তবে এক বছর পর সেলেসাওদের স্কোয়াডে ফিরেছেন ডেভিড লুইস। এ ছাড়া ম্যানচেস্টার সিটির তারকা স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে দলে রেখেছেন কোচ টিটে।
তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে পুরো শক্তির দল নিয়েই নামছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি তো রয়েছেনই। সঙ্গে জুভেন্টাস তারকা পাওলো দিবালা, গঞ্জালো হিগুয়াইন, পিএসজির অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াও রয়েছেন স্কোয়াডে। তবে বাদ পড়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা সার্জিও আগুয়েরো। মেসি, হিগুয়াইন, দিবালা ছাড়াও ২০১৩ সালের পর প্রথম আর্জেন্টিনা দলে ডাক পেয়েছেন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দি। আর এই ম্যাচের মাধ্যমে আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে অভিষেক হচ্ছে সাম্পাওলির।
তাই বলে ফিফা র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল ব্রাজিলকে দুর্বল ভাবার কারণ নেই। গ্যাব্রিয়েল জেসুস, দগলাস কস্তা, ডেভিড লুইস, থিয়াগো সিলভা, ফিলিপে কৌতিনহো, উইলিয়ানরা করো চেয়ে কম নন। নেইমার নেই তো কী হয়েছে। হলুদ জার্সি গায়ে উঠতেই মাঠে অন্য রকম এক তেজ চলে আসে ব্রাজিলের ফুটবলারদের মধ্যে।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাবে না। ১১৩ বছরের ১০৭ বার মুখোমুখি হয়েছে এ দুটি দল। ব্রাজিল জিতেছে ৪৪টিতে আর আলবিসেলেস্তেদের জয় ৩৭ ম্যাচে। তবে সর্বশেষ ম্যাচে জয় পেয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিল। গত বছরের নভেম্বরে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। আগামী ১৩ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। এরপর ৩১ আগস্ট বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মেসির দলের প্রতিপক্ষ লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়ে।
রাজিল দল : দিয়েগো আলভেজ, উইভারর্টন, এডারসন, আলেক্সসান্দ্রো, ডেভিড লুইস, ফাগনার ফিলিপে লুইস, জিল, জেমারসন, রাফিনহা, রদ্রিগো কাইও, থিয়াগো সিলভা, ফার্নানদিনহো গিলিয়ানো, লুকাস লিমা, পাউলিনহো, ফিলিপে কৌতিনহো, রেনাটা অগাস্টো, রদ্রিগিনহো, উইলিয়ান, দিয়েগো সওজা, ডগলাস কস্তা, গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও টাইসন।
আর্জেন্টিনা দল : সার্জিও রোমেরো, নাহুয়েল গুজমান, গেরোনিমো রুলি, হাভিয়ের মাসচেরানো, ইমানুয়েল মামানা, গ্যাব্রিয়েল মারকাদো, নিকোলাস ওটামেন্দি, এদুয়ার্ডো সালভিও লুকাস রদ্রিগো, এভার বনেগা, ম্যানুয়েল লানজিনি, লিওনার্দো পারেদেস, গুইদো রদ্রিগেজ, লিওনেল মেসি, গঞ্জালো হিগুয়েইন, জোয়াকিন কোরেয়া, আলেজান্দ্রো দারিও, মাউরো ইকার্দি, ডি মারিয়া ও পাউলো দিবালা।