বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে জনাব অতিরিক্তের গল্প

এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়। দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ, মাশরাফি, তাসকিনরা। চাপ সামলে সত্যিই দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তবে আরো একজনের কথা না বললে এই অসাধারণ ম্যাচের গল্পটা অপূর্ণ থেকে যায়। তিনি হলেন জনাব অতিরিক্ত।
ব্যাট-বলের সংস্পর্শ ছাড়াই যেগুলো রান হিসেবে গণ্য হয়, সেগুলোকেই ডাকা হয় অতিরিক্ত বলে। ক্রিকেট ম্যাচে যে এই অতিরিক্ত মশাই মাঝেমধ্যেই মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন, তা আবারও দেখা গেল বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচে। যেখানে দুই ইনিংসে তার ভূমিকা ছিল পুরোপুরি দুই ধরনের।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামার সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন, পাকিস্তানকে ১৩০ রানের মধ্যে আটকে রাখার চেষ্টা করবেন। আর সত্যিই সেটার বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের বোলাররা দেখালেন অভূতপূর্ব নৈপুণ্য। পুরো ইনিংসে একবারও মাঠে উঁকি দিতে পারলেন না জনাব অতিরিক্ত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশই প্রথম দল, যারা পুরো ২০ ওভার বোলিং করে একটিও অতিরিক্ত রান দেয়নি।
বুধবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে হয়ে গেল ৫১৬তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আর এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কোনো ইনিংসে অতিরিক্ত খাত থেকে কোনো রান এলো না।
দুর্দান্ত-নিয়ন্ত্রিত বোলিং-ফিল্ডিংয়ের দারুণ এক নজিরই গড়েছেন তাসকিন-মাশরাফি-সাকিবরা।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বোলিংয়ের সময় চিত্র ছিল অনেকখানি ভিন্ন। সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহর দারুণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি জনাব অতিরিক্তও বাংলাদেশকে বেশ খানিকটা এগিয়ে দিয়েছিলেন জয়ের পথে। অতিরিক্ত থেকে যে বাংলাদেশ অনেক বেশি রান পেয়েছে, তা কিন্তু না। মাত্র ৮ রান এসেছিল অতিরিক্ত থেকে। কিন্তু দুটি অতিরিক্ত এমনভাবে, এমন সময়ে এসেছিল, যা বাংলাদেশের জয়ের পালে দিয়েছে জোর হাওয়া।
জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। পাকিস্তানের দুর্ধর্ষ পেসার মোহাম্মদ আমির তাঁর আগের ওভারেই সাকিবকে আউট করে শেষ করেছিলেন বোলিং কোটা। ১৯তম ওভারে বল হাতে দেখা গেল অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ সামিকে। প্রথম তিন বলে দিলেন তিন রান। বাংলাদেশের জয়ের সমীকরণ দাঁড়াল ৯ বলে ১৫। চতুর্থ বলে সামি দিলেন সেই মহামূল্যবান অতিরিক্ত। আম্পায়ারের নো বলের ইশারায় আউটের হাত থেকে বেঁচে গেলেন মাশরাফি। পরের বলের ফ্রি-হিট থেকে পাওয়া গেল আরো একটা রান। অতিরিক্তের কল্যাণে এক বলেই চার রান পেয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের তখন চাই ৮ বলে ১১ রান।
অতিরিক্তের কারসাজি তখনো ফুরায়নি। ওভারের পঞ্চম বলে আবারও সামির ওভার স্টেপিং। আবারো নো বল ও ফ্রি-হিট। মাহমুদউল্লাহর দারুণ একটি চারের সুবাদে এই বল থেকেও পাওয়া গেল ছয় রান। জয়টাও নিশ্চিত হয়ে গেল তখনই। পরের ওভারের প্রথম বলে চার মেরে মাহমুদউল্লাহ তো শুধু সৌজন্য রক্ষা করলেন।