চলে গেলেন কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/06/04/photo-1465020074.jpg)
কিংবদন্তি মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
মোহাম্মদ আলীর পরিবারের মুখপাত্র বব গানেল সংবাদমাধ্যমকে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অ্যারিজোনার ফনিক্সের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসি জানায়, অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি মোহাম্মদ আলীকে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফনিক্স শহরের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানেই লাইফসাপোর্টে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন মোহাম্মদ আলী।পার্কিনসনস নামক পেশির কম্পনজনিত রোগের কারণে ওই সমস্যা আরো গুরুতর হয়ে দেখা দেয়।
মোহাম্মদ আলীর পরিবার জানিয়েছে, কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুসইসভিলে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে লাইট হেভিওয়েড বক্সিংয়ে সোনা জয়ের মধ্য দিয়ে মোহাম্মদ আলী খ্যাতি অর্জন করেন। এর পর পরই পেশাদার মুষ্টিযুদ্ধে চলে যান আলী। ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ বলে খ্যাত এই মুষ্টিযোদ্ধা ১৯৬৪ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা সনি লিস্টনকে হারিয়ে হেভিওয়েড চ্যাম্পিয়ন হন। প্রথম মার্কিন কোনো মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে তিনবার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন আলী। ৬১টি মুষ্টিযুদ্ধের ৫৬টিতেই জয় পান তিনি, এর মধ্যে ৩৭টিই ছিল নক আউট (প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী)। ১৯৮১ সালে অবসর নেন মোহাম্মদ আলী। রিংয়ের বাইরে কথাবার্তা, খেলায় ভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা এবং অনন্য ক্রীড়াশৈলীর জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি।
১৯৯৯ সালে ক্রীড়া সাময়িকী ‘স্পোর্টস ইলাসট্রেটেড’ মোহাম্মদ আলীকে স্পোর্টসম্যান অব দ্য সেঞ্চুরি ঘোষণা করে। একই বছর বিবিসি তাঁকে ঘোষণা করে ‘স্পোর্টস পার্সোনালিটি অব দ্য সেঞ্চুরি’।
মুষ্টিযুদ্ধের বাইরেও বিখ্যাত ছিলেন মোহাম্মদ আলী। নাগরিক অধিকারকর্মী এবং কবি হিসেবে খেলা, বর্ণ ও জাতিসত্ত্বার ঊর্ধ্বে ছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সালে ইসলামী সংগঠন নেশন অব ইসলামে যুক্ত হন মোহাম্মদ আলী এবং ১৯৭৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে তাঁর নাম পরিবর্তিত হয়।
একবার মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তিনি কীভাবে মানুষের স্মরণে থাকতে চান। তাঁর উত্তর ছিল, একজন মানুষ হিসেবে যিনি কখনো তাঁর মানুষকে বিক্রি করেনি। যদি তা সম্ভব না হয়, শুধুই মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে। আমাকে কেউ স্মরণে না রাখলেও কিছু মনে করব না।
১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখে বাংলাদেশ ভ্রমণে আসেন মোহাম্মদ আলী। সপ্তাহব্যাপী এই ভ্রমণে সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী ভেরোনিকা। ওই সময় তিনি বাংলাদেশের সুন্দরবন, সিলেট, রাঙামাটি, কক্সবাজার ভ্রমণ করেন। তখন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয় আলীকে। ওই সময় আলী মজা করে বলেছিলেন, কখনো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হলে তাঁর থাকার একটা জায়গা হলো।