‘অত্যাচারে’র অবসানে আজমলের উচ্ছ্বাস
ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে আট মাস ক্রিকেট থেকে ‘নির্বাসিত’ জীবন কাটাতে হয়েছে সাঈদ আজমলকে। অ্যাকশন শুধরে জাতীয় দলে ফিরে খুশি তো বটেই, ভীষণ নির্ভারও পাকিস্তানের এই অফস্পিনার। তাঁর কাছে ক্রিকেটবিহীন জীবন ছিল ‘অত্যাচারে’র নামান্তর।
আসন্ন বাংলাদেশ সফরে তিনটি দলেই ৩৭ বছর বয়সী আজমলকে রেখেছে পাকিস্তান। ১৩ এপ্রিল ঢাকায় পা রাখতে যাওয়া পাকিস্তান দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলবে এ সফরে।
অনেক দিন পর ক্রিকেটে ফিরে আজমল উচ্ছ্বসিত। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেট ছাড়া বেঁচে থাকা যেন নিজেকেই অত্যাচার করা। আট মাস এই যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে হয়েছে। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়।’
২০১৪ সালের আগস্টে পাকিস্তানের শ্রীলঙ্কা সফরের সময় আজমলের ‘সন্দেহজনক’ বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ‘রিপোর্ট’ করেন আম্পায়াররা। এর পর ‘বায়োমেকানিক্যাল’ পরীক্ষায় বোলিংয়ের সময় ডান কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হওয়ার কারণে তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইসিসি।
গত ফেব্রুয়ারিতে বোলিং অ্যাকশন শুধরে নেওয়ার পর আইসিসি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল। তবে বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের বেশ কিছু সাফল্যের রূপকার। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর চলার সময় মাঠের বাইরে বসে থাকার আফসোস এখনো যেন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আজমলকে, ‘আমি বিশ্বকাপ টেলিভিশনে দেখেছি। ওই ৪৫ দিন আমি চাইতাম, টেলিভিশনের ভেতরে ঢুকে সতীর্থদের সঙ্গে খেলতে, নিজের দায়িত্ব পালন করতে। সে সময় মনে হতো, তাঁরা (পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা) আমার অভাব অনুভব করছে। কারণ, ব্যাটিং পাওয়ার-প্লের সময় আমি সব সময়ই বেশ কার্যকর, উইকেট নিতে সক্ষম, যা আমাদের খেলায় তেমন চোখে পড়েনি।’
বিশ্বকাপের সময় সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টার কথাও জানালেন এখনো ওয়ানডে বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে তিন নম্বরে থাকা আজমল, ‘আমি অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। তাঁকে ও অন্য খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দলের বাইরে থাকা খুবই কঠিন ব্যাপার।’
সেসব দুঃখের দিন পেছনে ফেলে এখন সামনের দিকে তাকিয়ে ৩৫ টেস্টে ১৭৮ আর ১১১ ওয়ানডেতে ১৮৩ ও ৬৩ টি-টোয়েন্টিতে ৮৫ উইকেট নেওয়া আজমল।