তামিমের আদর্শে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জুনিয়র তামিমের
দুজনেই বাঁহাতি ওপেনার। ক্রিকেটে দুজনের রোলটাও একই—ওপেনিং করা। তাই একজনের বিকল্প কিংবা উত্তরসূরি হিসেবে আরেকজনকে ভেবে নেওয়াটা মন্দ হবে না। বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরাও হেঁটেছেন সেই পথে। চোটের কারণে বাইরে থাকা তামিম ইকবালের বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিমকে। যাকে নিজের আইডল মানেন তার ভূমিকাতেই জাতীয় দলে রঙিন অধ্যায় শুরু ২২ বছর বয়সী জুনিয়র তামিমের।
দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশের দলের সঙ্গী তামিম। পারফর্ম দিয়ে ওপেনিংয়ে জায়গাটা পাকা করে নিয়েছিলেন। হয়ে ওঠেন দেশসেরা ওপেনার। কিন্তু, সব কিছুরই শেষ আছে। বয়সের কোটা ৩৪ ছুঁয়েছেন তামিম। প্রতিনিয়ত লড়ছেন চোটের সঙ্গে। চোট খেলতে দেয়নি এশিয়া কাপেও। তাই তার উত্তরসূরি হিসেবে এভার জুনিয়র তামিমকে বেছে নেয় বিসিবি।
২২ বছর বয়সী তামিম এশিয়া কাপ দিয়ে প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ‘এ’ দলের হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে সবার নজরে আসেন তামিম। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে গত মাসে ব্যাট হাতে আলো ছড়ান। ১১৬.৯৯ স্ট্রাইক রেটে মাত্র চার ম্যাচেই করেন তিনটি হাফসেঞ্চুরি। ব্যাটিংয়ের ধরনও ছিল দারুণ। তাই জাতীয় দলে তার জায়গা পাওয়াটা অনেকটা অনুমিতই ছিল। অবশেষে সত্যি সত্যিই তামিমের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাখা মেলার দুয়ার খুলল।
জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) প্রথমবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন তামিম। ক্যামেরার লাইট-মাইক্রোফোনের পরীক্ষায় প্রথমই দিন সবাইকে মুগ্ধ করেছেন তরুণ এই ক্রিকেটার। জাতীয় দলে নিজের অভিজ্ঞতাসহ সাংবাদিকদের নানা প্রশ্ন দারুণভাবে সামলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
শেরেবাংলার প্রেস কনফারেন্স রুমে ঢুকে প্রথমে সবাইকে সালাম দেন তামিম। এরপর একে একে উত্তর দেন সব প্রশ্নের। নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি, সেটা আবার এশিয়া কাপে। এটা অনেক ভালো লাগার। সিনিয়রদের সাথে অনুশীলন করছি অনেক ভালো লাগা কাজ করছে। যদিও সিনিয়রদের সাথে বিভিন্ন লোকাল টুর্নামেন্টে খেলা হয়েছে আমার। তবে এখন খুব উপভোগ করছি।’
তানজিদ তামিমের পজিশনটা ওপেনিং। তাই স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে তামিম ইকবালের প্রসঙ্গটা। জুনিয়র তামিম জবাব দিয়েছেন এভাবে, ‘দেখুন তামিম ভাইয়ের কথা বললে বলব, উনি সবার আইডল। উনার খেলা দেখেই ছোট থেকে বড় হয়েছি। চেষ্টা করব জায়গাটা ধরে রাখার। আগে থেকেই এটা (তামিম ইকবালের সঙ্গে মিল) শুনতেছি। আসলে আমি ছোট থেকেই উনাকে দেখে বড় হইছি। যখন দেখি আমার নামের সাথে উনার মিল আছে তখন থেকে আরো বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। উনার থেকে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। উনি কীভাবে ব্যাটিং করেন, কীভাবে পরিস্থিতি সামলান সেসব দেখে শেখার চেষ্টা করেছি। দেখা হলে তিনিও নানা রকম পরামর্শ দেন, সব বিষয়েই অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করেন।’
গত কয়েকদিন দলের সঙ্গে অনুশীলনের রোমাঞ্চ নিয়ে তানজিদ তামিম বলেছেন, ‘আমি সত্যিই অনেক উপভোগ করেছি। টিম ম্যানেজম্যান্ট আমাকে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছেন। সবাই বলেছেন, আমি যেভাবে এতদিন ব্যাটিং করেছি যেন সেভাবে ব্যাটিং করি। কোচও বলেছেন, এতদিন যেভাবে খেলেছ, সেভাবেই খেলবা। এরপর নিজ থেকে সমস্যা হলে আমাদের বলবা। উনি প্রশ্ন করতে ভালোবাসেন। যাতে নিজেদের ভেতর থেকে সবকিছু আসে। শুধু আমি না সবাই চেষ্টা করছে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার।’