হেডের কাছে ভারত মানেই সৌভাগ্যের পরশমণি
ভারতের মাটিতে গেল বছর বিশ্বকাপটা খেলারই কথা ছিল না। কারণ, বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে বাঁ হাত ভেঙে গিয়েছিল ট্রাভিস হেডের। কিন্তু কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের জহুরির চোখ। সোনার হরিণ চিনতে ভুল হয়নি তার। তাইতো বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে হেডকেই চেয়েছিলেন তিনি।
যেই কথা সেই কাজ। পুরোপুরি ফিট না থাকা হেডকে নিয়ে বিশ্বকাপের দল সাজায় অস্ট্রেলিয়া। পরের গল্পটা সবার জানা। ধর্মশালায় বিশ্বকাপ অভিষেকটা বিধ্বংসী শতকে সাজান হেড।
সেদিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্রেফ ৬৭ বলে ১০৯ রানের খুনে ইনিংস খেলেছিলেন হেড। যাতে ১০টি চারের পাশে সাতটি ছক্কা। সেঞ্চুরির পাশাপাশি রেকর্ড বইয়েও নাম লেখান হেড। কিউইদের বিপক্ষে ৫৯ বলে সেঞ্চুরি করার মাধ্যমে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে যান তিনি। ভেঙে দেন রোহিতের ৬৩ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড। এ ছাড়া বিশ্বকাপ অভিষেকেও তার চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি করতে পারেননি কেউ। বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও দ্রুততম শতক ছিল সেটি।
এর পরের গল্পটা বিশ্বকাপের ফাইনালে। ভেন্যু ভারতের আহমেদাবাদ। প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভারত। সেদিন হেড বুঝিয়ে দিয়েছিলেন—ঠিক কেন কোচ তাঁকেই চেয়েছিলেন। সেদিন ভারতের দেওয়া ২৪০ তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪৭ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সেই বিপদ সরিয়ে রাজা বনে যান হেড। ১২০ বলে ১৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে তিনি হয়ে ওঠেন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব জয়ের নায়ক। তার আগে অ্যাশেজ ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নের ফাইনালেও অসিদের নায়ক ছিলেন হেড।
উপরের কথাগুলো শুনে হয়তো ভাবছেন কেন এখন বলছি কথাগুলো। বলার কারণ টা আবারও তৈরি করে দিয়েছেন ট্রাভিস হেড এবং সেটিও ভারতের মাটিতেই। বিশ্বকাপ মাতিয়ে যাওয়া হেড এবার আইপিএলে উড়ছেন। বেঙ্গালুরুর এম চেন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে সোমবার ছক্কার বৃষ্টি ঝরান অসি তারকা। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ৮ ছক্কা ও ৯ চারে ৪১ বলে ১০২ রানের খুনে ইনিংস খেলেন হেড। তাতে দলও পায় ২৮৭ রানের পুঁজি। যা আইপিএলের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রান। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ওপেনারের ৩৯ বলে ছোঁয়া শতকটিও হায়দ্রাবাদের হয়ে দ্রুততম।
এমন রান বন্যা ঝরানোর পর ভারতের মাটি হেডের কাছে সৌভাগ্যের পরশমণি নয়তো কী?