পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
ব্যাটিং ব্যর্থতার ফাঁক ফোকরে দুই-একটা ভালো ইনিংস আর বোলারদের একটুখানি লড়াই, কিন্তু শেষটা সেই হার দিয়েই। গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে লড়াই করার সুযোগই পাননি বোলাররা। হারই তাই অমোঘ নিয়তি হয়ে উঠল বাংলাদেশের। বড় হারে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হলো নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
আজ রোববার (৬ অক্টোবর) মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১২৭ রান তোলে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জবাবে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় ভারত। দলটির হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দারুণ শুরু করে স্বাগতিকরা। দলীয় ২৫ রানে রান আউট হয়ে অভিষেক শর্মা ফিরলেও রানের গতি কমতে দেননি সূর্যকুমার যাদব ও সানজু স্যামসন। মাত্র পঞ্চম ওভারেই পঞ্চাশ পূর্ণ হয় ভারতের।
অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসেই সাফল্য পান মেহেদী হাসান মিরাজ। স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিলেন সানজু স্যামসন। ৬ চারে ১৯ বলে ২৯ রান করে আউট হন ভারত ওপেনার। এরপর ক্রিজে এসে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান পান্ডিয়া ও নিতিশ রেড্ডি। এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জয় নিশ্চিত হয় ভারতের। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গৌতম গম্ভীরের শিষ্যরা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চার মেরে ইনিংসের শুরু করলেও দুই বলের বেশি টিকতে পারেনি ওপেনার লিটন দাস। ভারতীয় পেসার আর্শদীপের বলে বড় শটের চেষ্টায় উইকেট বিলিয়ে দেন। আর্শদিপের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি অন সাইডে বড় শটের চেষ্টায় হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। উইকেটের কাছ থেকেই ক্যাচ নেন রিঙ্কু সিং। দুই বলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
লিটনের পর আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনও দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ। ফের একবার সুযোগ পেয়েও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। আর্শদীপের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। আগের ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে দুর্দান্ত ফ্লিক শটে ছক্কা মেরে ভালো কিছুর আভাস দেন পারভেজ। কিন্তু পরের ওভারে আর্শদিপের বল স্টাম্পে টেনে আনেন তরুণ ওপেনার। ৯ বলে ৮ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন তাওহিদ হৃদয়। তবে, জীবন পেয়েও তিনি পারেননি লম্বা ইনিংস খেলতে। অফ স্টাম্পের ডেলিভারি সুইপ করেন হৃদয়। ডিপ মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ পান নিতিশ। কিন্তু বলের দূরত্ব বুঝতে না পেরে খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। যার ফলে জীবন পেয়ে ইনিংসের শুরু করেন হৃদয়। তবে, দলীয় রানের মাথায় ভারুণ চক্রবর্তীর বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন হৃদয়। আউটের আগে করেন ১৮ বলে ১২ রান।
হৃদয়ের পর দলের বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় ছক্কার চেষ্টায় উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি। অভিষিক্ত মায়াঙ্ক যাদবের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি বড় শটের চেষ্টায় ডিপ পয়েন্টে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ২ বলে মাত্র ১ রান করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
এরপর মিরাজকে নিয়ে ভালো কিছুর আশা দেখান অধিনায়ক শান্ত। তবে, সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। দ্বাদশ ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন শান্ত। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১টি করে চার-ছক্কায় ২৫ বলে ২৭ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মিরাজ। যদিও পারেননি দলকে লড়াকু সংগ্রহ গড়ে দিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ১৯.৫ ওভারে ১২৭/১০ (ইমন ৮, লিটন ৪, শান্ত ২৭, হৃদয় ১২, মাহমুদউল্লাহ ১, জাকের ৮, মিরাজ ৩৫, রিশাদ ১১, তাসকিন ১২, শরিফুল ০, মুস্তাফিজ ১; আর্শদীপ ৩.৫-০-১৪-৩, পান্ডিয়া ৪-০-২৬-১, ভারুণ ৪-০-৩১-৩, মায়াঙ্ক ৪-১-২১-১, নিতীশ ২-০-১৭-০, সুন্দর ২-০-১২-১)
ভারত : ১১.৫ ওভারে ১৩২/৩ (স্যামসন ২৯, অভিষেক ১৬, সূর্যকুমার ২৯, নিতীশ ১৬, পান্ডিয়া ৩৯; শরিফুল ২-০-১৭-০, তাসকিন ২.৫-০-৪৪-০, মুস্তাফিজ ৩-০-৩৬-১, রিশাদ ৩-০-২৬-০, মিরাজ ১-০-৭-১)
ফলাফল : ভারত ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : ভারত ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে