বিসিবি নির্বাচনের আগে আলোচনায় বুলবুলের চিঠি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী ৪ অক্টোবর। তার আগেই কাউন্সিলর মনোনয়নকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলর মনোনীত হয়ে ফর্ম জমা দিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সংগঠকরা। তবে অ্যাডহক কমিটির বাইরে থেকে মনোনয়ন দেওয়ায় অনেক জেলার আবেদন বাতিল করে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
বাতিল করাতেই শেষ নয়, এরপর নিজে স্বাক্ষর করে চিঠি পাঠিয়েছেন অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়নের জন্য। আর এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কাউন্সিলর চেয়ে পাঠানো প্রথম চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। কিন্তু পরের চিঠিতে, যেখানে কাউন্সিলর পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে, সেখানে স্বাক্ষর করেছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি প্রশ্নবিদ্ধ।
জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের স্বাক্ষরে বিসিবিতে ৫৩টি ফর্ম জমা পড়ে। অনেক জেলা অ্যাডহক কমিটিকে বাদ দিয়ে কাউন্সিলর ঠিক করেছে। অন্তবর্তী সরকারের সময়ে সব জেলা ও বিভাগীয় কমিটি ভেঙে গঠিত হয় অ্যাডহক কমিটি। সেখান থেকেই নতুন করে কাউন্সিলর পাঠানোর নির্দেশ দেন বিসিবি সভাপতি বুলবুল।
বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন অ্যাডহক কমিটির বাইরে থাকা জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা। যেসব জেলা ক্রীড়া সংস্থা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের (ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারের) স্বাক্ষরে কাউন্সিলর চূড়ান্ত করেছে তারা বলছে, নতুন তালিকা চাওয়ার যুক্তিযুক্ত কারণ নেই। এছাড়া অনেক জেলার দাবি, বিসিবি সভাপতির এমন চিঠি বিসিবি ও স্থানীয় সংগঠনের গঠনতন্ত্রবিরোধী।
তারা দাবি করে, গঠনতন্ত্রের ১২.৭ ধারা অনুযায়ী, একবার কাউন্সিলর চূড়ান্ত হওয়ার পর নতুন কাউন্সিলর পাঠানোর সুযোগ নেই। একই সঙ্গে ১৪.২.১ ধারা অনুযায়ী, বিসিবি সভাপতিরও নতুন করে নির্দেশনা দেয়ার ক্ষমতা নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যেই গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেছে, সেটার ভিত্তিতে বিসিবির নির্বাচনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও হস্তক্ষেপ করারও সুযোগ নেই।
এই নিয়ে আলোচনা শুরু হলে বিসিবির পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, ‘সরকার অনুমোদিত যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেটার বৈধতার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী চিঠিগুলো ইস্যু করা হয়েছে। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা ফর্ম দিয়েছি, সবাই আমাদের ফরম্যাট অনুযায়ী জমা দেবে। ক্রিকেট বোর্ড সেটা যাচাই করবে। পরে অনুমোদিত হবে বোর্ড সভায়। হলে আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশনে দেব।’
বিসিবির যেকোনো চিঠি ইস্যু করেন প্রধান নির্বাহী। বোর্ডের চিঠিতে স্বাক্ষর করার দায়িত্ব সিইওর। এখন প্রশ্ন উঠেছে, কেন বিসিবির প্রধান নির্বাহীর বদলে সভাপতি নিজে চিঠিতে স্বাক্ষর করলেন?
এ বিষয়ে মিঠু বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটা তার (বিসিবি সভাপতির) এখতিয়ারে আছে। একইভাবে বুলবুল সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি তার ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন। ঠিক বা ভুলটা তো আমি বিচার করার কেউ না। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উনার (বুলবুল) যে সর্বময় ক্ষমতা আছে সেটারই ব্যবহার করেছেন।’