সিলেটে প্রথম দিন বাংলাদেশের
ভালো শুরুর পর মুহুর্মুহু ক্যাচ মিস দেখালো বাংলাদেশ। এতে প্রথম সেশনটি কাটলো বেশ হতাশায়। মধ্যাহ্নভোজনের পর অবশ্য সেই হতাশা খানিকটা ভুলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দিনের শেষ দুই সেশনে ৬ উইকেট নিয়ে সিলেটে প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে তারা। দিনশেষে আক্ষেপ হয়তো এতটুকুই। ক্যাচ মিস নাহলে আজই ব্যাটিংয়ে নামতে পারত বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সিলেটে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে ৯০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান তুলেছে আয়ারল্যান্ড।
শেষ বিকেলে নতুন বল পেয়েও কোনো সুবিধা আদায় করতে পারছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। অষ্টম উইকেটে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়েছিলেন জর্ডান নেইল আর ব্যারি ম্যাককার্থি। এই জুটিকেই অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছিল। দিনের শেষ বলে নেইলকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সেই জুটি ভাঙ্গেন তাইজুল ইসলাম। নেইল ফেরেন ৬০ বলে ৩০ রান করে।
চা বিরতির পর নেইলসহ বাংলাদেশ শিকার করেছে ৪ উইকেট। ৬৪তম ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম উইকেট শিকার করেন হাসান মুরাদ। স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৯৪ বলে ৪৪ রান করেন তিনি।
আরও পড়ুন: টেস্ট অভিষেক হলো হাসান মুরাদের
তিন ওভার পরে আরেক সেটব্যাটার লকরান টাকারকেও ফিরিয়ে দেন হাসান মুরাদ। স্টাম্পিং হওয়ার আগে ৮০ বলে ৪১ রান করেন টাকার। এরপর অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ-লিটন জুটি। মিরাজের বলে সামনে এগিয়ে মারতে যান, বল ধরেই চোখের পলকে স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেটকিপার লিটন দাস।
এর আগে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরান আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নি।
সেই ধারা বজায় রেখে এরপর আরও কয়েকটি সুযোগ এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু হতাশ করেন ফিল্ডাররা। চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ ওভারের মধ্যে তিনবার ক্যাচ ছাড়েন তারা। নাহিদ রানার করা চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে সহজ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সাদমান ইসলাম। ডাইভ দিয়েও ধরতে পারেননি পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচটি।
পরের ওভারে হাসান মাহমুদের করা চতুর্থ বলে পুল করতে গিয়ে টেস্ট অভিষিক্ত কারমাইকেল বল ভাসিয়ে দেন। স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা তাইজুল ইসলামের হাত ফসকায় সেই সুযোগটিও। এরপর ষষ্ঠ ওভারে আসে আরও এক সুযোগ। কিন্তু নাহিদ রানার করা ওভারের দ্বিতীয় বলে গালিতে পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচ ছাড়েন মিরাজ।
বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের মহরাকে কাজে লাগিয়ে মধ্যাহৃভোজন বিরতির আগে ২৬ ওভারে ১ উইকেটে ৯৪ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। তবে বিরতির পরে আবারও আইরিশদের চেপে ধরে বাংলাদেশ।
লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই উইকেট এনে দেন নাহিদ রানা। তার করা ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে সাদমানের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন স্টার্লিং। ৭৬ বলে ৯ চারে ৬০ রান করেছেন তিনি। ফেরার আগে কারমাইকেলে সঙ্গে ৯৬ রানের জুটি গড়েন স্টার্লিং, যেটি টেস্টে দ্বিতীয় উইকেট আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি।
আরও পড়ুন: টেস্টে ২৫ বছরে বাংলাদেশ : কোন বিভাগে কে সেরা?
এরপর চারে নামা হ্যারি টেক্টরকে দ্রুতই ফিরিয়ে দেন মিরাজ। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ১ রান করেন টেক্টর।
হাফসেঞ্চুরি করা কারমাইকেলকে ফিরিয়ে আইরিশদের প্রতিরোধ ভাঙ্গেন মিরাজ। শান্তর হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড : ৯০ ওভারে ২৭০/৮ (বালবির্নি ০, স্টার্লিং ৬০, কারমাইকেল ৫৯, টেক্টর ১, ক্যাম্ফার ৪৪, টাকার ৪১, ম্যাকব্রাইন ৫, নেইল ৩০, ম্যাককার্থি ১৭*; হাসান মাহমুদ ১২-৪-৩২-১, নাহিদ ১৪-০-৬৫-১, তাইজুল ২১-৬-৭২-১, হাসান মুরাদ ২০-৫-৪৭-২, মিরাজ ২৩-৬-৫০-৩)

স্পোর্টস ডেস্ক