নিরিবিলি মনোরম বাংলা বিচ

সাগর-নদী-পাহাড় মিলিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম। এর মধ্যে সাগরের বিশালতা আমাদের অনেককেই মুগ্ধ করে, যার আকর্ষণে আমরা বারবার ছুটে যাই সাগর পানে। তাই, যারা কিছুটা নির্জনে সমুদ্র উপভোগ করতে চান তাদের জন্য রয়েছে কিছু অপরিচিত বিচ। তেমনই একটি বিচ হলো ‘বাংলা বিচ’।
‘বাংলা বিচ’– স্থানীয় পরিচিতি খেজুরতলা বিচ। পতেঙ্গাস্থ স্টিলমিল বাজারের পশ্চিমে শেষ লোকালয় খেজুরতলার পাশেই বেড়িবাঁধের পরেই এর অবস্থান। ছুটির দিন ব্যতীত এই বিচে তেমন একটা লোকসমাগম হয় না। তাই বলে একদম জনশূন্য নয়। আশপাশের অনেকেই অবসর কাটাতে বা সকাল বিকেল হাঁটাহাঁটি করতে আসে। মূলত যারা কোলাহল বা জনসমুদ্র এড়িয়ে সাগরপাড়ে একান্ত কিছু সময় কাটাতে চায় তাদের জন্য অসাধারণ একটা স্থান।
বাঁধের ওপর দিয়ে কিছুটা দক্ষিণে হাঁটলেই পাবেন স্লুইসগেট আর পাথর বসানো সেই পরিচিত বাঁধ। আর উত্তর পাশে গেলে দেখতে পাবেন সুন্দরবনের মতো ম্যানগ্রোভ বন, দেখা মিলবে মাটির উপরে গাছের শ্বাসমূল। জায়গাটার নাম খেজুরতলা হলেও তেমন কোনো খেজুরগাছের দেখা মিলবে না। এক সময় বাঁধের পাশে ছিল সারিসারি খেজুর গাছ, যা এখন বিলীন।
চাইলে পুরো দিনটা কাটিয়ে দিতেন পারেন নির্দ্বিধায়।
কীভাবে যাবেন
চট্টগ্রামের যেকোনো বাসস্টপেজ থেকে সহজেই যেতে পারেন অনিন্দ্য সুন্দর এই বিচে।
একেখান-অলংকার/বহদ্দারহাট/নিউমার্কেট-রেলস্টেশন থেকে সরাসরি সিএনজি নিয়ে যেতে পারবেন (ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা) অথবা কাঠগড়গামী লোকালবাস বা মিনিবাসে করে স্টিলমিল বাজার নামতে হবে (ভাড়া ১৫-২০ টাকা)। এরপর পশ্চিম দিকের রাস্তা থেকে রিকশা নিয়ে খেজুরতলা বেড়িবাঁধ (ভাড়া ২০ টাকা)। বাঁধে উঠলেই দেখতে পাবেন আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত বিচ।
থাকা-খাওয়া
জায়গাটা পর্যটন এরিয়া না হওয়ায় এর আশপাশে তেমন ভালো কোনো খাওয়ার হোটেল বা থাকার ব্যবস্থা নেই। ছোটখাটো কিছু দোকান আছে, চা-নাস্তা খাওয়ার মতো। তবে ভালোমানের খাওয়ার জন্য আপনাকে স্টিলমিল বাজার আসতে হবে। আর এখানে রাত কাটানোর মতো তেমন কোনো প্লেস নেই। নিতান্ত বাধ্য হলে ফ্রি-পোর্ট মোড়ে আছে হোটেল মুন ইন্টারন্যাশনাল। অথবা আগ্রাবাদ-জিইসি-নিউমার্কেটে অনেক ভালো মানের আবাসিক হোটেল পাবেন।
আরো কিছু বিষয়
ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্ভাবনায় সময় কাটাতে পারবেন, চেষ্টা করবেন রাত হওয়ার আগেই বিচ ত্যাগ করার। যদিও আজ অব্দি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, ফ্রেন্ডদের সঙ্গে রাত ৯-১০টা পর্যন্ত বিচে ছিলাম।
যেখানেই যাবেন স্থানীয়দের সম্মান দিবেন, হোক সেটা শহরে বা পাহাড়ে।
আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে সঙ্গে করে নিয়ে এসে লোকালয়ের নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবেন।