ঈদের ছুটিতে
আজমির শরিফ ও রাজস্থানের মরুভূমি থেকে
আজমির শরিফের কথা অনেকেই জানি। এই স্থানটি পরিদর্শন করার অনেকেরই প্রবল ইচ্ছে আছে। আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ থাকে তাহলে আপনিও মন স্থির করে ফেলুন আজমির শরিফ দর্শনের। সেই সঙ্গে দেখে আসুন মরুভূমির অবাক করা সৌন্দর্য এবং আজমিরের আরো কিছু দর্শনীয় স্থান।
যা করতে হবে
আপনার পাসপোর্ট ভিসা প্রস্তুত থাকলে ঢাকা টু কলকাতা সৌহার্দ্য বাসের টিকেট কেটে ফেলুন।টিকেট মূল্য এক হাজার ৭০০টাকা। টিকেট পাবেন ঢাকার কমলাপুর ও শ্যামলীর শ্যামলী কাউন্টার থেকে। কলকাতায় পৌঁছে চলে যান ফেয়ারলি প্লেস নামক জায়গায়। সেখান থেকে আপনি সুলভ মূল্যে কলকাতা থেকে আজমির যাওয়ার টিকেট কিনতে পাবেন।
ট্রেন এবং আসনের উপর ভিত্তি করে টিকেট মূল্য হয়ে থাকে। তবে টিকেট মূল্য ৭০০ রুপি থেকে াতন হাজার ৪০০ রুপি হতে পারে। পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে ৩৬ থেকে ৪০ ঘণ্টা। ট্রেন থেকে বাইরের অপরূপ দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
কোথায় থাকবেন
আজমির স্টেশনে নেমে সামনেই ট্যাক্সি দেখতে পাবেন। ট্যাক্সি নিয়ে চলে যান আজমির শরিফ গেট। আজমির শরিফ মাজারে প্রথমে প্রবেশ না করে এর আশপাশে কোনো একটি হোটেলে উঠে পড়ুন। এখানে এক হাজার ২০০ রুপি থেকে তিন হাজার রুপির মধ্যে আপনি ভালো হোটেল পাবেন। যেমন হোটেল বাবা প্যালেস (যোগাযোগ : ০৯০০১১৩০৩৩৩, ০১৪৫২৬২৭০৩০) । এখানে এক হাজার ২০০ রুপি থেকে দুই হাজার ৭০০ রুপির মধ্যে খুব ভালো রুম পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া এখানে ওয়াইফাই সুবিধা, রুমেই খাবার অর্ডার দেওয়ার সুবিধা, অগ্রিম ট্রেনের টিকেট কাটার সুবিধা এবং ঘুরতে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া করার সুবিধা আপনি এখানে পাবেন। এগুলো আপনি বাইরেও করতে পারেন এতে কিছু টাকা কমে পাবেন।
ফোটো : রাজস্থানি পোশাক পরে বন্ধুদের মাস্তি।
কী দেখবেন
দরগা শরিফ
প্রথমেই আপনি দরগা শরিফ ঘুরে দেখতে পারেন। এখানে সবসময় ইবাদাত বন্দেগি হতেই থাকে।সারা দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে এখানে মানুষ আসে।
ফোটো ক্রেডিট : খাইরুল ইসলাম সুজন
আজমির শহর
এরপর আপনি চাইলে আজমির শহরের অলিগলি ঘুরে দেখতে পারেন। একটি বিষয় আপনাদের বলে রাখা ভালো যে এখানে খুব কমদামে বিছানার চাদর, লেহাঙ্গা , পাঞ্জাবি ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়। আপনি চাইলে খুব ভালো মানের আতর কিনতে পারবেন এখান থেকে।
পুস্কর : একটি গাড়ি ভাড়া করুন। সারা দিনের জন্য ভাড়া ৮০০-১০০০ রুপি । বসতে পারবেন ৭-৮ জন । এরপর বেরিয়ে পড়ুন সারা দিনের ট্রিপে। পুস্করের প্রতিটি স্থান আপনাকে বিস্ময়ে অবাক দেবে। মরুভূমির সাদা পাহাড় , পুরনো মন্দির , পুস্কর লেক , মরুভূমিতে সূর্যাস্ত সবই অপূর্ব। আপনি চাইলে রাজস্থানি পোশাক পরে উটে চরে ঘুরে দেখতে পারেন মরুভূমি। উটে চরে মরুভূমি দেখার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না , সে এক অন্য আনন্দ। সেখানে আপনি দেখবেন বিখ্যাত কারান আর্জুন ছবির সুটিং স্পট, টিভি সিরিয়াল দিয়া অর বাতি হাম এর সুটিং স্পট আমলকি এবং গোলাপের বাগান। এ ছাড়া সন্ধায় উঁচু পাহাড় থেকে পুস্কর শহর দেখে মনে হয় যেন আকাশের তারাগুলো মাটিতে নেমে এসেছে। এ ছাড়া পুস্কর লেকের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করে দিতে পারে ।
তারাগর ফোর্ট
বিস্ময়ে মুগ্ধ হতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন তারাগর ফোর্ট।পাহাড়ের ওপর নির্মিত প্রাচীন এই ফোর্টটি দেখে অনেকটা গ্রিক সভ্যতার কথা মনে মনে যায়।এই ফোর্টটির কারুকার্য সত্যিই বিস্ময়কর।
আকবর ফোর্ট
আজমির শহরে অবস্তিত এই ফোর্টটি মুঘল স্থাপত্তের নিদর্শন বহন করছে। এটি বর্তমানে জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে। এখানে রয়েছে বেশকিছু নিদর্শন। প্রবেশ মূল্য বিদেশিদের জন্য ৫০ রুপি।
আনা সাগর লেক
পৃথিবী রাজ চৌহানের দাদা রাজা আনাজি চৌহান এই লেকটি নির্মাণ করেন যা আজমিরের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।আপনিও চাইলে এই লেকটি মন ভরে দেখে আসতে পারেন।
এছাড়া ঘুরে দেখতে পারেন আদাই দিন কা ঝোপড়া, সাই বাবা মন্দির, দোলতবাগ ইত্যাদি।
কী করবেন
শপিংয়ের জন্য দরগা বাজার বেছে নিতে পারেন। চামড়ার কিছু যেমন ব্যাগ জুতা ইত্যাদি কিনতে চাইলে ড্রাইভারকে বলুন তিনিই আপনাকে নিয়ে যাবেন।কিছু বিশেষ খাবার যেমন লস্যি, পোহা, বিরিয়ানি এবং রাজস্থানি খাবার ডাল বাতি চুরমা খেয়ে দেখতে পারেন।
যা মনে রাখবেন
১। দরগা এলাকায় পবিত্রতা বজায় রাখুন।
২। সন্ধ্যার আগেই মরুভূমি থেকে ফেরত আসুন।
৩।যেখানে ফটো তোলা নিষেধ সেখানে তা করা থেকে বিরত থাকুন।
৪।পর্যাপ্ত পানি সঙ্গে রাখুন।
৫।সবার সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করুন এবং নিরাপদে দেশে ফেরত আসুন ।