ঈদের ছুটিতে
২৫ রুপিতে কফি হাউজের কফি

‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, আজ আর নেই। কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই, আজ আর নেই।’ মান্না দের গাওয়া সেই কালজয়ী গান শোনেননি এমন লোক পাওয়া খুব দুষ্কর। অনেক আগেই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন বন্ধু নিখিলেশ সন্ন্যাল, সুজাতা, মইদুল, গোয়ানিস ডি সুজা, অমল, রমা রায়কে নিয়ে গাওয়া সেই গানের কিংবদন্তিরা আজ আর নেই। মান্না দেও চলে গেছেন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবরে; কিন্তু এখনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়েই দাঁড়িয়ে আছে তাঁর বিখ্যাত সেই কফি হাউজ। আর আসছে বন্ধের সময়টা কাজে লাগিয়ে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন ইন্ডিয়ান কফি হাউজে। মাত্র পঁচিশ রুপিতে পেতে পারেন সেই কফির অসাধারণ স্বাদ।
ইতিহাস
বাঙালির প্রাণের এ আড্ডাস্থলটির নাম একসময় কফি হাউজ ছিল না। অ্যালবার্ট হল ছিল এর পূর্বনাম। ১৮৭৮ সালের এপ্রিলে তৎকালীন ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়ার স্বামী অ্যালবার্টের নামকরণে এটির নামকরণ করা হয়। এর পর কেটে গেছে প্রায় ১৪০ বছর। উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী নানা আন্দোলন-সংগ্রামের অনেক ইতিহাসে জড়িয়ে আছে কফি হাউজটির নাম। মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষ বসু, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যজিৎ রায়, সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, বাঙালি অভিনেতা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মতো কত বিখ্যাত ব্যক্তি আড্ডা দিয়েছেন এই কফি হাউজে।
যা দেখবেন
কফি হাউজে যেতে হলে আপনাকে প্রথমেই কলকাতার যেকোনো প্রান্ত থেকে কলেজ স্ট্রিটে যেতে হবে। আর কলেজ স্ট্রিটে স্কুল কলেজের সব ছাত্রছাত্রীর আনাগোনা থাকে সকাল থেকে রাত অবধি। একটু সামনে গিয়ে রাস্তার বাঁ পাশে মোড় নিতেই চোখে পড়বে কফি হাউজের। INDIAN COFFEE HOUSE, COLLEGE STREET ALBERT HALL। দোতলায় উঠতে প্রথমেই চোখে পড়বে সামনে টানানো ‘কফি হাউজ’ সাইনবোর্ডটা। আর আট-দশটা বাঙালি ধাঁচের হোটেল রেস্টুরেন্টের মতোই কলকাতা কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউজ। পুরাতন এক হলরুম। পঞ্চাশ-ষাটটার মতো টেবিল সারি সারি সাজানো। দেয়ালে সারি সারি সাজানো ভারতবর্ষের বিখ্যাত সব শিল্পীর চিত্রকর্ম। সঙ্গে আছে ওপরতলায় ওঠার সিঁড়ি। সেখানে আছে পঁচিশটার মতো টেবিল। বিকেল বেলায় গেলে বসার জায়গা পাওয়া কঠিন কাজ। কফি হাউজে, বিশেষ করে চোখে পড়বে নবীনদের সঙ্গে সঙ্গে প্রবীণদের আনাগোনা। আমাদের দেশে এ ধরনের দোকানে সাধারণত কলেজপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের ভিড়ই থাকে বেশি। সেখানে নবীন-প্রবীণদের মিশ্রণে জমজমাট আড্ডা দেখে ভালোই লাগবে আপনার।
ঢাকা থেকে কীভাবে যাবেন
ইন্ডিয়ান হাইকমিশন ঢাকা ওয়েবসাইটে ভিসার ই-টোকেন ফরম পাওয়া যায়। যেখানে কোন পথে আপনি যাবেন, তার একটি অপশন রয়েছে। তবে ভারতীয় ভিসায় এখন যেকোনো দুটি পথের অনুমোদন নিতে পারেন। রেলপথ, সঙ্গে আকাশপথ। নতুবা সড়কপথের সঙ্গে আকাশপথ। এখানে আপনি রেলপথে গিয়ে আকাশপথে ফিরতে পারেন। অথবা আকাশপথে গেলেন সড়কপথে ফিরতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
কলকাতায় আপনি যে পথেই আসেন না কেন, শহরে অনেক ভালো হোটেল রয়েছে। আপনি সহজেই ৫০০ থেকে এক হাজার রুপির মধ্যে ভালো হোটেল পেয়ে যাবেন। তবে এর চেয়ে বেশি দামের হোটেলও রয়েছে এখানে। কয়েকটি হোটেলের নাম ও ঠিকানা –
হোটেল মণীষ, ঠিকানা : পি-১, ডবসন লেন, দীঘা বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে, ফোন নং : ০৩৩-২৬৬৬৬৩১৯, ২৬৬৬৬৩২০।
সর্বাধিক রুম ভাড়া : এক হাজার ৫০০ রুপি, সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৫০০ রুপি।
দ্য নিউ অশোকা হোটেল, ঠিকানা : ১৯/১/১/৪ সত্যনারায়ণ মন্দিরের নিকট, মুখরাম কানোরিয়া রোড, ফোন নং : ০৩৩-২৬৬৬৪২০৯।