ছুটির দিনে
ঘুরে আসুন ধরলা নদীর পাড় থেকে

নদীর কথা এলে স্বাভাবিকভাবে পালতোলা নৌকা, মাঝির কথা চলে আসে। যা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে আকর্ষণের জায়গা। একদিনের ট্যুরে আপনি ও আপনার পরিবার চাইলে ঘুরে আসতে পারেন উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পাড় থেকে। ধরলা নদীর পশ্চিম-উত্তর পাড়ে রয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর একটি পার্ক ও দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে সুবিশাল মাঠ। স্থানীয় লোকজন যাকে মদনের মাঠ বলে জানে, আপনি চাইলে সময় করে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মিলনস্থলও দেখে আসতে পারেন।
ধরলা নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। ধরলা নদীর উৎপত্তিস্থল হিমালয়ে জলঢাকা বা শিংগিমারি নদী থেকে। এ নদীটি পশ্চিম বঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রবেশের পর নদীটি পাটগ্রাম থানার কাছে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ-ভারতের এই আন্তঃসীমান্ত নদীটি জলঢাকা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে মূলত ধরলা নামেই কুড়িগ্রামের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশেছে। কুড়িগ্রাম জেলার সঙ্গে তার উপজেলা নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ধরলা ব্রিজ বানানো হয়। বলে রাখা ভালো দিনের থেকে রাতে এলাকার সৌন্দর্য অধিক মায়াময়।
যেভাবে যাবেন
রাজধানীর আসাদগেট, কল্যাণপুর অথবা গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যেকোনো কুড়িগ্রামগামী বাসে করে প্রথমে আপনাকে কুড়িগ্রাম যেতে হবে। এসি বাসের ক্ষেত্রে টিকেটের দাম পড়বে ৮০০ টাকা আর নন-এসি বাসের ক্ষেত্রে টিকেটের দাম পড়বে ৫৫০ টাকা। ভালো বাসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হক স্পেশাল নাবিল, হানিফ, এস এন ও এনা পরিবহন। কুড়িগ্রামে বেশ কিছু ভালো থাকার হোটেল আছে। হোটেল অর্ণব প্যালেস, হোটেল ডিকে, হোটেল মেহেদি। সেখানে আপনি সকালে রেস্ট নিতে পারবেন। তবে আপনাকে সকালের নাশতা হোটেলের বাইরে আলাদা করে সেরে নিতে হবে। কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড নেমে আপনাকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অথবা রিকশায় করে যেতে হবে ধরলা নদীর পাড়। রিকশার ক্ষেত্রে ভাড়া সময়ভেদে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ক্ষেত্রে ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা। মূলত ধরলার পূর্ব হোক আর পশ্চিম পাড়েই হোক না কেন, সকালের থেকে বিকেলে যাওয়াই ভালো। পূর্বপাড়ে রয়েছে সুবিশাল মদনের মাঠ আর বেড়িবাঁধ। আর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে পার্ক। নদীতে স্রোত কম থাকলে আপনি নৌকা ভাড়া করে ধরলাম চর ও বিকেলের সূর্যাস্ত সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন।
কোথায় খাবেন
খাবারের জন্য কুড়িগ্রামে রয়েছে একাধিক হোটেল। তবে কুড়িগ্রামের যেসব হোটেল রয়েছে, তার মধ্যে দুপুরের খাবারের জন্য শাপলা মোড়ের নান্না বিরিয়ানি, এশিয়া হোটেল ও কাপড় বাজার এলাকার বগুড়া দধিঘর অন্যতম। আর দামে খুব সস্তা। ধরলার নদীর পাড়ে এসে কিন্তু সাজুর দোকানের বিখ্যাত চা আর চপের স্বাদ না নিলেই নয়।
সতর্কতা
১) দূরের পথে সঙ্গে শুকনা খাবার নিতে পারেন।
২) বাসের ছাদে উঠবেন না।
৩) অটোরিকশায় লাফালাফি করবেন না।
৪) সব যানবাহনে ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে নিন।
৫) নৌকায় চড়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন, সম্ভব হলে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন।