অনাহারীদের খাবার দিতে আবারও মাঠে সৈকত
চলমান ‘কঠোর লকডাউনে’ রাজধানীর ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে বন্ধুদের নিয়ে আবারও মাঠে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সদস্য ও ছাত্রলীগের উপ-মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
গত বছরের লকডাউনে টানা ১২১ দিন টিএসসি এলাকায় মানুষের দুই বেলা খাবার কার্যক্রম পরিচালনা করে জাতিসংঘ থেকে ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি পান তানভীর হাসান সৈকত’।
করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশে ‘কঠোর লকডাউন’ চলছে। এ কারণে কর্মহীন হয়ে খাদ্য সংকটে ভুগছেন অনেকে। সেই অনাহারীদের মুখে রান্না করা খাবার তুলে দিতে এবারও কাজ শুরু করেছেন সৈকত ও তাঁর বন্ধুরা।
নিজেদের অর্থায়নসহ বন্ধু-বান্ধব ও বড় ভাইদের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফটকের সামনে রান্না করে দুই বেলা খাবার বিতরণ করছেন সৈকত। প্রতিদিন দুপুর ২টা ও রাত ৯টার দিকে টিএসসির সামনের রাস্তায় দেড় হাজারের বেশি মানুষকে খাবার দেওয়া হচ্ছে।
সৈকত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এবার কঠোর লকডাউনে পথশিশুসহ ছিন্নমূল ও কর্মহীন ভাসমান মানুষ সবচেয়ে বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই আষাঢ় মাসের তুমুল ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও চলমান কঠোর লকডাউনে খাদ্য সহায়তা নিয়ে এসব মানুষের পাশে আছি। লকডাউন যতদিন চলবে, আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
এ কাজে লোকজনের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত হলে আরও বেশি মানুষের দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগনেতা সৈকত।
গত বছর লকডাউন ঘোষণার পর টানা ১২১ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ভাসমান মানুষদের মধ্যে রান্না করা খাবার দিয়েছিলেন সৈকত ও তাঁর বন্ধুরা। এরপর সুনামগঞ্জের বেদেপল্লি ও গুচ্ছগ্রামে বেলা খাবার দেওয়া হয়।
এরপর গত রমজান মাসেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেহেরি কার্যক্রমে খাবার রান্না ও বিতরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন সৈকত। চালু করা হয় শিশু খাদ্য কার্যক্রম।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও অতিমাত্রায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দুর্গম ও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচরে অসংখ্য পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় ঢালচরে ছয় পরিবারের ভিটায় নিজেরা মাটি কেটে ঘর তুলে দেন। ১০০ পরিবারের কাছে চাল, ডাল, তেল, শুকনা খাবার, সেলাইন ও খাবার বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ উপহার পৌঁছে দেন সৈকতের বন্ধুরা।
লক্ষ্মীপুরের ছেলে সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন। তিনি ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে গত ডাকসু নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।