পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর পাশে সৈকত
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/10/20/soikot.jpg)
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন ডাকসুর সাবেক সদস্য ও ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
গত ১৮ অক্টোবর ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সারা দেশে এর প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ করেছে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন থেকে শুরু করে ব্যক্তিপর্যায়ে বিভিন্ন জন।
এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে মশাল মিছিল করেন সৈকতেরা।
এ বিষয়ে ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমরা এসেছি এ মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে, এদের সান্ত্বনা দিতে। আমরা অভয় দিতে চাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বাংলায় কোনো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের স্থান নেই। এদেশে যুগ যুগ ধরে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একসঙ্গে বাস করছে। আগামী দিনেও আমরা একসঙ্গে এ দেশে বাস করব।’
সৈকত আরো বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সব সময়ই স্পষ্ট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর এ দেশে যারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা করছেন বা মদদ দিচ্ছেন তাদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়াও আমরা তাদের জন্য সাধ্যমতো কিছু সহায়তাও করব।’
করোনা মহামারির শুরু থেকেই সরকার লকডাউন ঘোষণার পর টানা ১২১ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ভাসমান মানুষদের মধ্যে রান্না করা খাবার দিয়েছিলেন সৈকত ও তাঁর বন্ধুরা। এরপর সুনামগঞ্জের বেদেপল্লি ও গুচ্ছগ্রামে ২৩ দিন দুই বেলা খাবার বিতরণ করেন সৈকত ও তাঁর বন্ধুরা। এরপর গত রমজান মাসেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেহেরি কার্যক্রমে খাবার রান্না ও বিতরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন সৈকত। চালু করা হয় শিশু খাদ্য কার্যক্রম।
এরপর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও অতিমাত্রায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুর্গম ও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচরে অসংখ্য পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় ঢালচরে ছয় পরিবারের ভিটায় নিজেরা মাটি কেটে ঘর তুলে দেন। ১০০ পরিবারের কাছে চাল, ডাল, তেল, শুকনা খাবার, সেলাইন ও খাবার বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ উপহার পৌঁছে দেন সৈকতের বন্ধুরা। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের টিকার নিবন্ধন করলে বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমও চালু করেন।
এসব কর্মকাণ্ডের কারণে সবার কাছে মানবিক নেতা হিসেবেই পরিচিত সৈকত। আর স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর জাতিসংঘ থেকে পান ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ স্বীকৃতি।
লক্ষ্মীপুরের ছেলে সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন। তিনি ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে গত ডাকসু নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।