অর্থনীতির বিকাশে সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগাতে হবে : মৎস্যমন্ত্রী
সুনীল অর্থনীতির বিকাশে সি-উইড (সামুদ্রিক আগাছা) ও অন্যান্য সমুদ্রসম্পদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের একটি হোটেল বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত সি-উইডজাত পণ্য উৎপাদন ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হোসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই এর প্রকল্প পরিচালক মো. মুহিদুল ইসলাম।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘অপ্রচলিত সমুদ্রসম্পদ সি-উইড অপ্রচলিত হলেও এর বহু গুণাগুণ রয়েছে। ওষুধ, প্রসাধনী ও ভেষজ সামগ্রী এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার তৈরিসহ সি-উইডের বহুমুখী ব্যবহারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখন সি-ফুডের জন্য আলাদা রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে। সামুদ্রিক মাছের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। প্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের পাশাপাশি সি-উইডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সি-উউইডের বহুমুখী ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যপণ্য হিসেবে এর স্বাদ ও পরিবেশনের বিষয়টি আলাদাভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। সি-উইডজাত খাবারে আমাদের অভ্যস্ততা বাড়াতে হবে।’
প্রধান অতিথি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় আমাদের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ এবং খনিজ সম্পদ রয়েছে। সমুদ্রসম্পদ আহরণ হবে দেশের উন্নয়নের আরেকটি বিশাল অধ্যায়। সমুদ্রের গভীরের মাছ, সামুদ্রিক শৈবাল, খনিজসম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এজন্য দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করতে হবে।’
মৎস্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সি-উইড পণ্যের সম্প্রসারণে সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমাদের সম্পদ আমাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। যারা বিপণন ও খাবার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আছেন, তারা সি-উইড পণ্য মানুষকে অভ্যস্ত করাবেন। এক্ষেত্রে সব ধরনের প্রতিকূলতা দূর করা হবে। আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন। যে খাতকে বিকশিত করা দরকার তিনি সে খাতকেই বিকশিত করেন। সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগাতে আমরা যে চাহিদা দেব, তিনি তা পূরণ করবেন। সমুদ্রে নির্গত বর্জ্য সমুদ্রের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই সমুদ্রে বর্জ্য নির্গত হওয়া বন্ধ করা এবং বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে সরকারের উদ্যোগ রয়েছে।’
পরে মন্ত্রী বিএফআরআই এর সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রে সি-উইড উৎসবের উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন সি-উইডজাত পণ্যের স্টল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, বিএফআরআই গবেষণার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ২৩ প্রজাতির বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন সি-উইড শনাক্ত করেছে এবং ৬ প্রজাতির বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন সি-উইড চাষ করছে।