অর্থ আত্মসাৎ : মেজর জেনারেল (অব.) জালালের ১৭ বছর জেল
মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের নামে ৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদকে দুই ধারায় ১৭ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভুইঞার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিচারক রায়ে আরেক আসামি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সনাতনকাঠি গ্রামের বাসিন্দা শেখ সামসুর রহমানের ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ছয় কোটি টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন। এদিকে আসামিরা শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। আজ তাদের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করেন আদালত। বিচারক এর মধ্যে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় ১২ বছর ও দণ্ডবিধির ৪২০/১০৯ ধারায় ধারায় পাঁচ বছরসহ মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে দুটি সাজা একসাথে কার্যকর হবে বিধায়, আসামিকে ১২ বছরের কারাভোগ করলেই হবে।’
নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পরিবারের সদস্যসহ মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। মামলায় ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি জালাল উদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী ও সোসাইটির সহসভাপতি আলেয়া ফাতেমা, ছেলে ও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তালহা আহমেদ এবং মেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাদিয়া আহমেদকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে জালাল উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীকালে তদন্তের মাধ্যমে শেখ সামসুর রহমানকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে আদালত জালাল উদ্দিনের স্ত্রৗ ও সন্তানদের অব্যাহতি দিয়ে মামলার বিচার শুরু করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সেনাবাহিনী থেকে ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর নেন জালাল উদ্দিন আহমেদ। পরবর্তী সময়ে তিনি ও তার স্ত্রী আলেয়া ফাতেমা ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে সমবায় ব্যবসা শুরু করেন। এ সময় তিনি গ্রাহকদের আশ্বাস দেন, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অনুকূলে এফডিআরের মাধ্যমে টাকা রাখলে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। তিনি এক হাজার ৪৪৯ বিনিয়োগকারীর মোট ৫৯ কোটি ৩৯ লাখ এক হাজার ৪৫৪ টাকা ওই মাল্টিপারপাসের নাম রশিদের মাধ্যমে জমা নেন। কিন্তু ওই সোসাইটির ব্যাংক হিসেবে কোনো অর্থ জমা না দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছেলে ও মেয়ের কাছে ওই অর্থপাচার করেন।