ওমানে ঘূর্ণিঝড় শাহীনের আঘাতে লক্ষ্মীপুরের তিনজন নিহত
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে ঘূর্ণিঝড় শাহীনের আঘাতে লক্ষ্মীপুর সদরের তিন প্রবাসী নিহত হয়েছেন। নিহতরা উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা। গতকাল বুধবার নিহতদের মরদেহ শনাক্ত করে ওমান পুলিশ।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন পার্বতীনগরের চেরাঙ্গ বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে শামছুল ইসলাম (৫৪), একই গ্রামের কাজী বাড়ির শুক্কুর উল্লার ছেলে জিল্লাল হোসেন (৪৫) ও মিঝি বাড়ির আবদুস শহিদের ছেলে আমজাদ হোসেন হৃদয় (২৮)। তাঁরা তিনজনই নিকটাত্মীয় ছিলেন। শামছুল ইসলাম ও জিল্লাল সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে তাদের বাতাস ও পানির স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়ভাবে খোঁজাখুঁজির পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশের সন্ধান মেলে। নিহতদের মধ্যে শামছুল ইসলাম ৩০ বছর ওমানে চাকরি করেছেন। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। জিল্লাল ১৫ বছর ধরে ওমানে রয়েছেন। তাঁর পরিবারে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। এ ছাড়াও হৃদয় আট বছর আগে ওমানে চাকরি করতে যান।
নিহতরা প্রত্যেকেই তাদের পরিবারের উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন। তাদের মৃত্যুতে পরিবার, আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহতরা ওমানের সাহামে উম্মে ওয়াদি লেবান পারপার স্থানে খেজুর বাগানে কাজ করতেন। গত রোববার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওমানে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিপাতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। এতে প্রায় দশ মিটার উঁচু ঢেউ তৈরি হয়। ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার।
নিহত হৃদয়ের বাবা আবদুস শহিদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তাঁর ছেলেসহ অপর দুইজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরমধ্যে শামছুল ইসলাম ও জিল্লালের মরদেহ মঙ্গলবার সকালে ওমান পুলিশ উদ্ধার করে। বুধবার বিকেলে হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পার্বতীনগর ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘তাদের মৃত্যুর খবর দুঃখজনক। নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘পরিবার ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিহতদের মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে। নিহতদের পরিবারের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে।’