কর্ণফুলীতে গোসল করতে নেমে কলেজছাত্রের মৃত্যু
কাপ্তাইয়ের শীলছড়ির সীতারঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে গোসল করতে নেমে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তন্ময় দাশ (১৯) নামের ওই কলেজছাত্র গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় রাতেই।
তন্ময় দাশ (১৯) চট্টগ্রাম মহানগরের টাইগার পাস এলাকার বাসিন্দা সুবল দাশের ছেলে। তন্ময় চট্টগ্রাম সিটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বলে জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধুরা।
নিখোঁজ তন্ময়ের মাসতুতো (খালাতো) ভাই কৃষ্ণ নাথ জানান, চট্টগ্রাম থেকে তন্ময়সহ মোট নয়জন তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তাঁরা পরে কর্ণফুলী নদীর ধারে অবস্থিত সীতার ঘাট মন্দিরে ঘুরতে যান। মন্দির দর্শনের পর তাঁরা বিকেলে পার্শ্ববর্তী ঘাটে কর্ণফুলী নদীতে গোসল করতে নামেন। একপর্যায়ে চোখের পলকে কর্ণফুলী নদীতে নিখোঁজ হয়ে যান তন্ময়। পরে তাঁর বন্ধুরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে সরকারের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেন। পরে বিষয়টি কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসকে অবগত করলে ঘটনাস্থলে আসেন কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাঁরা এসে নিখোঁজ হওয়া তন্ময়কে খোঁজাখুজি শুরু করেন এবং রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেন। সন্ধ্যা ৭টার পর প্রথমে কাপ্তাই নৌঘাঁটি শহীদ মোয়াজ্জেম’র নৌ ডুবুরি দল এবং পরে রাঙামাটি জেলা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল যৌথভাবে নিখোঁজ তন্ময়ের উদ্ধারে কর্ণফুলি নদীতে নামেন। পরে রাত ৮টায় একই জায়গা হতে নিখোঁজ তন্ময়ের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। উদ্ধারের পর তাঁকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চন্দ্রঘোনা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাত ৮টায় ফায়ার সার্ভিস এবং নৌবাহিনীর ডুবুরি দল তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত তন্ময়ের লাশ মানবিক কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ওসি মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান।
এর আগে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, কাপ্তাই থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীন, ওসি (তদন্ত) আকতার হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুব আলম, কাপ্তাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টুসহ চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাই থানার থানার পুলিশ সদস্যেরা।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান জানান, সাঁতার জানা না থাকলে কেউ যেন নদীতে গোসল করতে না নামে, সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ হতে বার বার সর্তক করা হয়েছে।
কাপ্তাই থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীন বলেন, সরকারি সেবা লাইন ৯৯৯-এ তন্ময়ের বন্ধুরা কল করার পর আমরা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসি।
রাতে ঘটনাস্থলে তন্ময়ের বাবা-মা এবং আত্মীয়-স্বজন আসেন। এ সময় তাঁদের আর্তচিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।