গরু চুরির অভিযোগ ওঠা সেই ছাত্রলীগনেত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট
গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার সাভারের আলোচিত ছাত্রলীগ নেত্রী বাবলি আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার উপপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেন। ওই চার্জশিটে বলা হয়েছে, ‘গরু চোরচক্রের মাধ্যমে কৃষকদের গরু কিনে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করতেন বাবলি।’
গত বছরের ২ নভেম্বর সাভারের নয়াবাড়ী মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী ও সাভার সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাবলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর সারা দেশের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক বাবলি আক্তারকে সংগঠনের থেকে বহিস্কার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, পদে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগনেত্রী বাবলি বিবাহিত ছিলেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী অবস্থান জেনেও তাকে যারা দলে ফিরিয়েছিলেন তারাই প্রকৃতপক্ষে দলের সুনাম নষ্ট করেছেন। গরু চুরি মামলায় গ্রেপ্তারের আগে বাবলির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
বাবলিকে গ্রেপ্তারের পর সে সময়ের ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাবলিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়।
গ্ৰেপ্তারের পরদিন ৩ নভেম্বর বাবলিকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
১৮ দিন পর গত বছরের ২১ নভেম্বর ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমানের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী মো. আশরাফুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ১৮ জনকে সাক্ষী করে ওই মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বাবলি আক্তার চোরাই গরু ক্রয়-বিক্রয় দলের সক্রিয় সদস্য। আর অন্যরা পেশাদার গরুচোর। এ ছাড়া নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় পলাতক চোরাই গরুবহনকারী ট্রাকচালককে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর ধামরাই থানার কুল্লা ইউনিয়নের সিতি গ্রামে গরু চুরির ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন চোর আব্দুল লতিফের গোয়ালঘর থেকে আনুমানিক তিন লাখ টাকা মূল্যের দুটি গরু চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া করে ট্রাকের পিছু নেয় এলাকাবাসী। এ সময় ট্রাক থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে হাবুল সরদার নামের একজন ধরা পরে স্থানীয় জনসাধারণের হাতে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেড়িয়ে আসে বাবলির নাম।
বাবলির আইনজীবী মাসুদ খান খোকন এনটিভিকে বলেন, মামলায় পুলিশ বাবলীকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে। অভিযোগটি সত্য নয় বলে আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টা করব। আশা করি, বাবলী নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে এ মামলা থেকে খালাস পাবেন।