চাকরির নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪
মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিতে চাকরির জন্য টাকা নিয়ে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীতে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় চাকরি প্রত্যাশী প্রতারিত ৩৭ তরুণ-তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত এ অভিযান চালায় বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মেছোপাড়া জিউপাড়া গ্রামের মোহাইমিনুল হক মিনু (২৫) ও তাঁর স্ত্রী শিলা বেগম (২২), নাটোর সদর থানার জালালাবাদ গ্রামের শিমুর হোসেন (২৩) এবং রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ষষ্ঠিতলা গ্রামের রাকেশ দাস (৩০)।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার কয়েকটি ভবন ভাড়া নিয়ে এমএলএম কোম্পানিতে চাকরির কথা বলে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের জড়ো করেছে। তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণের নামে টাকা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ কমিশনার বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশকে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। এরপর ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার এবং ৩৭ জন চাকরি প্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে। পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকসহ আরএমপির সংশ্লিষ্ট জোনের কর্মকর্তারা পুরো অভিযান তদারকি করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই চারজন সম্প্রতি দড়িখড়বোনা এলাকায় তিনটি ভবন ভাড়া নিয়ে ‘বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সি’ নামের একটি এমএলএম কোম্পানির অফিস খোলে। এরপর চক্রটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরির জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা নেয়। সিভি জমা বাবদ ৫৬০ টাকা, চাকরিতে যোগদান বাবদ ৩৬ হাজার টাকা এবং এক মাসের থাকা, খাওয়া ও প্রশিক্ষণ বাবদ ৫০ থেকে ৬০ জনের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা করে আদায় করেন। এর মধ্যে অনেকেই কিছু টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার গন্ধ পেয়ে কেটে পড়েন। তবে অনেকেই টাকা দিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।
অভিযোগে আরও জানা গেছে, বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সি থেকে প্রশিক্ষণার্থীদের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি কিনতে বাধ্য করা হয়। এসব জিনিস কেনা বাবদ আলাদা করে টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতারকরা আরও তরুণ-তরুণীদের আনতে বিভিন্ন স্থানে সাব এজেন্ট নিয়োগ দেয়।
পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, এটি একটি প্রতারক চক্র। তারা শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। সম্প্রতি গোয়েন্দা সূত্রে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। প্রতারিতরাও ফোনে তাঁকে অভিযোগ করেন। প্রাথমিক খোঁজখবরের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, রোববার রাতে পুলিশ তিনটি বাড়িতে অভিযান চালায়। চার প্রতারককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে প্রতারিত তরুণ-তরুণীদের উদ্ধার করে অভিভাবকদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।