চিত্রনায়িকা মাহির স্বামীর পুরোনো ৩ মামলা সচল হচ্ছে
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার দুই মামলা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলেও আরও তিনটি পুরোনো মামলা সচল হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রকিব সরকার গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে চিত্রনায়িকা মাহির স্বামীর পুরোনো আরও তিন মামলা সচলের ইঙ্গিত দেন।
জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রকিব সরকারের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর ঘটনা সত্য, কিন্তু ওইসব মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ সেসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। পুলিশ যেকোনো সময় মামলাগুলো সচল করতে পারে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে। আমরা মামলাগুলো খতিয়ে দেখছি। মামলাগুলোর কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলা তিনটি হয়েছে জয়দেবপুর থানায়।’
রকিব সরকার পবিত্র ওমরা পালন শেষে আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান নায়িকা মাহিয়া মাহি। পরে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় তাঁদের বাসভবনে চলে যান।
রকিব সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই মিথ্যা মামলাগুলো আইনিভাবেই মোকাবিলা করব। সত্যের জয় হবেই। আমি কোনো অপরাধ করিনি, অন্যায় করিনি।’
এর আগে গতকাল শনিবার সকালে পবিত্র ওমরা পালন শেষে ঢাকায় আসেন রাকিবের স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। বিমানবন্দর থেকে জিএমপির বাসন থানা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে বাসন থানা থেকে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে তাঁকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে মাহিয়া মাহির আইনজীবীরা আদালতে তাঁর জামিন আবেদন করলে আদালত তাঁকে জামিন দেন। রাত পৌনে ৮টায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কারামুক্ত হয়ে মাহি তাঁদের ফারিশতা রেস্টুরেন্টের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর সঙ্গে মানবিক আচরণ করেনি। তিনি এক গ্লাস পানি চাইলে পুলিশ তাঁকে এক ঘণ্টা পর পানি দেয়। পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং অসুস্থ্য, প্রচণ্ড গরমে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পুলিশ এসব কথার তোয়াক্কা না করে তখন তাকে বলছিল, এভাবেই যেতে হবে। তার পরও তাঁর প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়। বিমানবন্দরে তাঁকে রিসিভ করতে যাওয়া কোনো স্বজনের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতে দেওয়া হয়নি।
মাহি জানান, ফেসবুক লাইভে তিনি পুলিশ প্রশাসন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি একজন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেছেন। ফেসবুক লাইভে এসে এভাবে কথা বলার কারণে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তিনি এসব ঘটনার বিচার দাবি করেন।
মাহি দাবি করেন, ‘অন্যায়ভাবে আমাদের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হলো অথচ পুলিশ উল্টো আমাদের এবং আমাদের কর্মচারীদের নামে মামলা দিয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।’
তবে মাহি কারা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। কারাকর্তৃপক্ষ তাঁকে অনেক সম্মান দেখিয়ে মানবিক আচরণ করেছেন বলেও জানান।