চোখের সামনে সহকর্মীর মৃত্যু, শঙ্কায় বাকি নাবিকদের ফেরার আকুতি
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় আটকেপড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ওপর রকেট হামলায় থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের নিহতের পর চরম নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন জাহাজের বাকি সদস্যেরা। সেখান থেকে নিরাপদে ফিরে আসার আকুতি জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এ ব্যাপারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
চোখের সামনে জাহাজের কক্ষ থেকে ফেরার আকুতি জানিয়ে এক নাবিকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ওই নাবিককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হইছে। একজন অলরেডি ডেড হইছে। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নাই, ইমার্জেন্সি জেনারেটর দিয়া পাওয়ার চলতেছে। আমরা মৃত্যুর সম্মুখীন হইছি। আমাদের এখনও উদ্ধার করা হয় নাই। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন, সবাই আছি। আমরা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি। আমাদের বাঁচান, আমাদের কোনো জায়গা থেকে আন্তরিক সহযোগিতা আসে নাই। আমাদের বাঁচান।’
জাহাজটির অপর এক নাবিক আরেকটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ। আল্লাহর রহমতে এখনও ভালো আছি। আমাদের জাহাজে অ্যাটাক হইছে। তো যাঁরা যাঁরা আমাকে ফোন দিছিলেন, তাঁদের উদ্দেশে বলতেসি—এখনও ভালো আছি। আর প্লিজ এই গভর্নমেন্টের যে যার লাইনে একটু চেষ্টা করেন, যেন আমাদের উদ্ধার করা হয়। আমাদের এখনও উদ্ধার করা হয়নি। মিডিয়াতে আসছে আমরা নাকি নিরাপদভাবে পোল্যান্ডে চলে গেছি। এটা একটা ভুল নিউজ, ফেক নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করেন।’
এদিকে হামলায় নিহত হাদিসুর রহমান আরিফের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের বরগুনার বেতাগীতে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমডি কমডোর সুমন মাহমুদ সাব্বির জানান, ‘বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে একটি শেল জাহাজের ব্রিজে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় জাহাজে আগুন ধরে যায়। তবে সবার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলার পর জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে এ নিয়ে তথ্য দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, জাহাজে অবস্থানকারী বাকি ২৮ জন অক্ষত রয়েছেন।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জাহাজটি আটকে আছে। কীভাবে জাহাজটি নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।