জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সেনাবাহিনীর নতুন কন্টিনজেন্টের ঢাকা ত্যাগ
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এলাকায় মোতায়েনের উদ্দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি কন্টিনজেন্টের ১৬০ সদস্যের প্রথম দল আজ মঙ্গলবার ঢাকাস্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। কন্টিনজেন্ট এর অন্যান্য দলসমূহ পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কয়েকটি ফ্লাইটে শান্তিরক্ষা মিশন আবেই এলাকায় গমন করবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই কন্টিনজেন্টটি নতুনভাবে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যবর্তী বিশেষ প্রশাসিত এলাকা আবেই মোতায়েন হতে যাচ্ছে। শান্তিরক্ষা মিশনের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ মেকানিজমের অংশ হিসেবে তিন দশকের বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই কন্টিনজেন্ট বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে সরাসরি অপারেশন এলাকায় জরুরি মোতায়েন করা হচ্ছে।
ব্যাটালিয়নের মূল দায়িত্ব হচ্ছে মিশনের সেক্টর এবং টিম সাইটগুলোর সুরক্ষা প্রদান করা। কেবল মৌলিক অস্ত্র সরঞ্জামাদি নিয়ে অপারেশন এলাকায় স্বল্পতম সময়ে মোতায়েন আমাদের শান্তিরক্ষী মিশনে একটি নতুন সংযোজন। বিরুপ আবহাওয়া, ভৌগলিক দূরত্ব ও ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবদান চলমান রয়েছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই কন্টিনজেন্টকে প্রস্তুত করেছে এবং অপারেশনাল এলাকায় নিয়োগের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এই কন্টিনজেন্টের দ্বিতীয় দল (১২০ জন) আগামী শুক্রবার (৪ মার্চ) এবং অবশিষ্ট দল (সর্বমোট ৫১২ জন) এপ্রিল মাসে মোতায়েন হবে।
আইএসপিআর জানায়, বর্তমানে বিভিন্ন মিশনে আমাদের জনবল ও সরঞ্জামাদি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে লাইট কুইক রিয়েকশন ফোর্স ও স্পেশাল ফোর্স কোম্পানির ৫০ জন জনবল বৃদ্ধি ও একটি লেভেল-২ হাসপাতাল (৬৯ জন), মালি-তে একটি মেকানাইজ ইনফেন্ট্রি কোম্পানি-কুইক রিয়েকশন ফোর্স (২৬৬ জন) মোতায়েন হতে যাচ্ছে। কঙ্গোতে একটি এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোসাল প্লাটুন (৩৬ জন) মোতায়েনের অনুরোধ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে আমাদের আরও একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, হেলিকপ্টার ইউনিটকে মোতায়েন প্রস্তুতির উচ্চতর স্তরে রাখার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তর এবং বিভিন্ন মিশনের নেতৃত্ব স্থানীয় পদে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পদায়নও বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চিফ অফ স্টাফ (ডি-১), দক্ষিণ সুদান ও আবেইতে একজন করে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ও বিভিন্ন মিশনে ৪ জন সেক্টর কমান্ডার পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
উল্লেখ্য, অনেকদিন ধরে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় মিশন কন্টিনজেন্টগুলোকে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদিতে সজ্জিত করা সম্ভব হয়েছে।