ঝালকাঠিতে হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন
ঝালকাঠিতে দোকান ম্যানাজার শাহাদাৎ হোসেন (৬৫) হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরি গ্রামের গিয়াস মল্লিক (৪৫), কিস্তাকাঠি গ্রামের শাহীন ভূইয়া (৩৫) ও মির্জাপুর গ্রামের জয়নাল কাদি (৪৬)। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোহরাব হোসেন নামে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত শাহীন ও জয়নাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গিয়াস মল্লিক পলাতক রয়েছেন।
ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল মান্নান রসুল মামলার সূত্রে জানান, পুরনো বিরোধের জেরে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল ঝালকাঠি শহরের স্টেশন রোডের একটি টিনের দোকানের ম্যানেজার শাহাদাৎ হোসেনকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে লঞ্চঘাট এলাকার জয়নাল কাদিরের বাসায় গলাকেটে হত্যা করে আসামিরা। পরে তাঁর লাশ সুগন্ধা নদীতে ফেলে দেন তারা। ২৩ এপ্রিল দুপুরে নদীতে ভাসমান অবস্থায় মাথাবিহীন শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিন ঝালকাঠি থানার শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শক (পিএসআই) আবদুর রহিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল কাদি নামের একজনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তির পর হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়। জানা যায়, ১৯৮০ সালে দেউরি গ্রামের মোকছেদ আলী মল্লিককে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ মামলায় আসামি ছিলেন শাহাদাৎ হোসেন। বাবাকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়াস মল্লিক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে শাহাদাৎকে হত্যা করেন।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শীল মণি চাকমা তদন্ত শেষে গত বছরের ২৮ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত ৩৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান রসুল ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বাবুল ও অ্যাডভোকেট ফয়সাল খান । এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার।
অন্যদিকে, ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।