টিকা রপ্তানিতে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবে ভারত : পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আশাবাদ
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা রপ্তানিতে কয়েক মাসের জন্য ভারতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে ভারত সরকার টিকার বিষয়ে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা জিনিসটা জানে না। আগে যে পেঁয়াজ বন্ধ হয়ে গেল, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানতো না। আমরা যখন তাদের অ্যাপ্রোচ করলাম, তখন তারা বাংলাদেশের জন্য রিলিজ করে দিল। তবে আমাদের ধারণা, এ ব্যাপারে যেহেতু অনেক আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আমরা জানিয়েছি, তারা এটা এক্সপ্লোর করবে। আমার ধারণা, আমার বিশ্বাস যে তারা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করবে।’
টিকা রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলেও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে আমাদের টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করি।’
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা কয়েক মাসের জন্য রপ্তানির অনুমতি দেবে না ভারত সরকার। একাধিক উন্নয়নশীল দেশের জন্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের চুক্তি করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। চলতি বছর যত করোনার টিকা উৎপাদন করা হবে, তার সিংহভাগই যাবে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর কাছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত টিকাগুলোর বেশিরভাগই উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে বিশ্বের অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা হাতে পেতে খুব সম্ভবত কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
এপির সঙ্গে টেলিফোনে সাক্ষাৎকারে সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, ভারতের টিকা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ গতকাল রোববার শর্ত সাপেক্ষে অক্সফোর্ডের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। শর্তে বলা হয়েছে, ভারতের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা বা টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আপাতত টিকা রপ্তানি করতে পারবে না সিরাম ইনস্টিটিউট।