নরসিংদীতে ব্যবসায়ী হত্যায় ১২ জনের নামে মামলা
পোলট্রি মুরগি ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে ককটেল মারতে বাধা দেওয়ায় বাড়িতে ঢুকে পোলট্রি মুরগি ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিহত ব্যবসায়ী জুলহাস মিয়ার (২৮) মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় এ হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের ৪০ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ঈদের দিন শনিবার সন্ধ্যায় রায়পুরার নিলক্ষ্যার বীরগাঁও গ্রামে নিজ বাড়িতে ঢুকে ওই পোল্টি ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়। ওই সময় তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন সাদ্দাম, ইয়ামিন, হাবিব ও আমিনুল নামে আরও চারজন। তাঁদের মধ্যে দুজন ঢাকায় অপর দুজন নরসিংদীর একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এর আগে নরসিংদীর শিবপুরে বাড়ির ভেতরে ড্রইং রুমে ঢুকে শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ খানকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। পরপর তিনটি গুলি করলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
জেলাজুড়ে প্রকাশ্যে এসব হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিলক্ষ্যা বীরগাঁও গ্রামে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। চাপা উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এলাকাজুড়ে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর নিহত জুলহাসের বাড়িতে খোঁজখবর নিতে গেছেন জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ নইম খান, নরসিংদী পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের দিন সন্ধ্যায় হরিপুর গ্রামের জিয়া, আরিফ, সোলমান, মামুনসহ বেশ কয়েক যুবক বীরগাঁও গ্রামের সামসু মিয়ার ছেলে জুলহাসের মুরগির ফার্মের সামনে ককটেল ফাটাতে থাকে। ওই সময় নিহত জুলহাস তাদের ককটেল ফুটাতে বারণ করেন। এতে তারা জুলহাসের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তারা দলবল নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জুলহাসের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গুলি করে। এ সময় তাঁর স্বজনরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও গুলি করে। পরে তাঁদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুলহাসকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ সন্ধ্যা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞতপরিচয় আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলাকরা হয়।
নিহত ব্যবসায়ীর ভাই মানিক মিয়া বলেন, হরিপুর গ্রামের জিয়া, আরিফ, সোলেমান, মামুনসহ বেশ কয়েক যুবক ককটেল ফুটাচ্ছে। তাদের বাধা দেওয়ায় তারা নির্মম ভাবে প্রকাশ্যে জুলহাসকে গুলি করে হত্যা করে। তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এসে বাড়িতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। এত বড় ঘটনার পরও তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
নিহত জুলহাসের মামা আজান মিয়া বলেন, ‘আমরা কখনও ঝগড়া পছন্দ করি না। আমাদের লোকজনকে যারা গুলি করে হত্যা ও আহত করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
রায়পুরা থানার ডিউটি অফিসার এসআই আরিফ রাব্বানি বলেন, নিহতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞতপরিচয় ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।