নরসিংদীর বেলাবোতে কিশোরীকে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
নরসিংদীর বেলাবোতে এক কিশোরীকে (১৫) ঘরে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পরে আটক তিনজনকে দুপুরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত রোববার বিকেলে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গকুলনগর এলাকার একটি বাড়িতে ওই কিশোরীকে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী কিশোরী রায়পুরা উপজেলার নারায়ণপুর এলাকার একটি কারখানায় কাজ করেন। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা থাকায় ওই কিশোরী মায়ের সঙ্গে থাকেন।
ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার তিন জন হলেন, রায়পুরার মুছাপুর ইউনিয়নের পাহাড়কান্দি এলাকার মোহাম্মদ আলী (৪০), জুয়েনা আক্তার ওরফে মায়া সরকার (৩০) ও তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম (৩৫)। জুয়েনা-খোরশেদ দম্পতি বেলাবো উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গকুলনগর এলাকায় ভাড়া থাকেন। অপর আসামি হলেন পাহাড়কান্দি এলাকার মো. সোহরাব হোসেন (৪০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী ভৈরবে এক বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। কর্মস্থলে ফেরার জন্য গেল রোববার সকাল সাতটার দিকে সে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি বাসে ওঠে। এ সময় বাসের পাশের সিটে বসা জুয়েনার সঙ্গে তার কথা হয়। জুয়েনা তাকে একটি ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। সকাল আটটার দিকে বেলাবো উপজেলার গকুলনগরে ওই নারীর বাড়িতে পৌঁছায় তাঁরা। এরপর কিশোরী ওই বাড়িতেই ছিল। বিকেল চারটার দিকে বাড়িটির একটি কক্ষে অবস্থানের সময় মোহাম্মদ আলী ও মো. সোহরাব হোসেন নামে দুই ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে জুয়েনা ও খোরশেদ এসে কিশোরীকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে সান্তনা দিয়ে বাড়িতেই আটকে রাখে।
পরদিন সোমবার বেলা ১১টার দিকে ওই বাড়ির সীমানায় এক নারীকে দেখতে পেয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানায় ওই কিশোরী। পরে তাঁর মাধ্যমে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি খবর দিলে পুলিশ বাড়িটিতে এসে কিশোরীকে উদ্ধার করেন এবং জুয়েনা ও খোরশেদকে আটক করে।
খবর পেয়ে বেলাব থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁরা ঘটনার কথা স্বীকার করে ধর্ষণে জড়িতদের নাম-পরিচয় জানায়। ওই রাতেই কিশোরীর বাবা বেলাব থানায় চারজনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দেন। রাতেই মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রজু হওয়ার পর দুপুরে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
কিশোরীর বাবা বলেন, ‘একটা ভালো কাজের ব্যবস্থা করে দেবে বলে আমার মেয়েকে আটকে রেখে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আমি তাদের বিচার চাই।’
বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ বলেন, ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন করা হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’