নিখোঁজের ৩৭ দিন পর উঠোন খুঁড়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজের ৩৭ দিন পর গৃহবধূ সুচিত্রা শব্দকরের (৪০) লাশ নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী সুবাস বাউরীকে আটক করে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী।
আজ বুধবার দুপুরে নিজ বাড়ির আঙিনার পাশের মাটি খুঁড়ে গৃহবধূ সুচিত্রার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সুচিত্রা শব্দকর কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকার সুবাস বাউরী ওরফে নুনুর স্ত্রী। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে গত ২২ জুন মঙ্গলবার নিখোঁজ হন সুচিত্রা শব্দকর। এক মাস সাতদিন পর আজ সকালে নিহত সুচিত্রার মেয়ে সীমা শব্দকরের (২২) জেরার মুখে তার বাবা সুবাস একপর্যায় স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান কুড়ালের আঘাতে সুচিত্রার মৃত্যু হলে তিনি লাশ বাড়ির আঙিনার পাশে গোপনে পুঁতে রেখেছেন। এ কথা শুনে মেয়ে চিৎকার শুরু করলে সুবাস পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে এলাকার লোকজন সুবাসকে পাত্রখোলা জামে মসজিদ এলাকা থেকে আটক করে। পরে তাকে বাড়িতে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং কমলগঞ্জ থানার পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) শহীদুল হক মুন্সী, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান, পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন তিনি পুলিশের কাছেও তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং লাশ পুঁতে রাখা স্থানটি দেখিয়ে দেন। পরে দুপুর ১টার দিকে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক সুবাস পারিবারিক কলেহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে জানান।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান জানান, লাশটির সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘাতক সুবাস বাউরী মাদকাসক্ত। তিনি সব সময় মদসহ নানা নেশা জাতীয় পানীয় পান করেন।