পাটকলের বদলি শ্রমিকদের জন্য ২১২ কোটি টাকা বরাদ্দ
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীন বন্ধঘোষিত মিলগুলোর বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য মোট ২১২ কোটি আট লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিজেএমসির বন্ধঘোষিত পাটকলগুলোর বদলি শ্রমিকদের ‘জাতীয় মজুরি স্কেল-২০১৫’ ও ‘জাতীয় মজুরি স্কেল-২০১০’-এর পার্থক্যজনিত বকেয়া পাওনা পরিশোধের এ অর্থ প্রদান করবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
আজ বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় এ অর্থ বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দকৃত এ অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ‘পরিচালন ঋণ’ বা ‘অপারেশন লোন’ হিসেবে এ টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। তবে, বরাদ্দকৃত অর্থ ২০২১-২২ অর্থবছরের বিজেএমসির অধীন ১৮টি মিলের ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।
পাওনা প্রদানের শর্তে বলা হয়, বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমিকের মিল প্রদত্ত টোকেন ও ইউনিক আইডি নম্বর, এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে। আবশ্যিকভাবে এনআইডি যাচাই করে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কোনোভাবেই এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব ব্যতীত বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা যাবে না।
বদলি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধকালে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার বিষয়টি সরকারি বিধি-বিধানের আলোকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয়ে পরিশোধ করবে। বকেয়া পাওনা পরিশোধকালে পাওনার বিষয়ে কোনো অসঙ্গতি দৃষ্টিগোচর হলে বিজেএমসি/মিল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে তা সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারের বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন। বরাদ্দকৃত অর্থের জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণচুক্তি সম্পাদন করতে হবে।
বিজেএমসির অধীন বন্ধঘোষিত মিলগুলোর বদলি শ্রমিকদের এনআইডি ও ব্যাংক হিসাব আছে এরূপ ২১ হাজার ৬৪৩ জন শ্রমিকের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ২১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এই শ্রমিকদের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ এনআইডি রয়েছে ৯১ জনের ও তাদের অনুকূলে আর্থিক সংশ্লেষ এক কোটি চার লাখ টাকা। ত্রুটিপূর্ণ এনআইডিভুক্ত শ্রমিক বাদে অবশিষ্ট ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের অনুকূলে বকেয়া পাওনা বাবদ মোট ২১২ কোটি আট লাখ টাকা ২০২১-২২ অর্থবছরে ‘পরিচালন ঋণ’ খাত হতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজেএমসির অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো ভাড়াভিত্তিক/ইজারা (লিজ) পদ্ধতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু কার্যক্রম চলমান আছে। বেসকারি ব্যবস্থাপনায় পুন:চালুকৃত মিলে অবসায়নকৃত শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে এসব মিলে কর্মক্ষম ও দক্ষ শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সব শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।