পূজামণ্ডপ-বাড়িঘরে হামলা-সহিংসতা : শাহবাগে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজামণ্ডপে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা ও সহিংসতার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শাহবাগের ব্যস্ততম সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় শাহবাগ থেকে পল্টন, সায়েন্স ল্যাব, বাংলামোটর ও টিএসসি অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা দুপুর ২টা পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধ করে রাখেন।
এ সময় সাত দফা দাবি জানিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। সেখানে ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় করতে হবে’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
আন্দোলনকারীদের সাত দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—হামলার শিকার মন্দিরগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করা; বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ক্ষতিপূরণ; ধর্ষণ ও হত্যার শিকার পরিবারগুলোকে স্থায়ী ক্ষতিপূরণ; দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা; জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে সাম্প্রদায়িক হামলার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের আধুনিকায়ন করে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা এবং জাতীয় বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জিডিপির ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, এসব দাবি আদায়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
অবরোধে যোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল শাহ বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সবার শরীরে একই রক্ত প্রবাহিত হয়। তাহলে এ ধর্মীয় উন্মাদনা কেন? ‘আমরা বাংলাদেশি। আমরা আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের অধিকার রাখি। আমাদের এই অধিকারে যারা হাত দিয়েছে, তাদের হাত আমরা ভেঙে দেব। আমরা এভাবে রাস্তা অবরোধ করতে চাইনি, কিন্তু আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। যারা আমাদের কারণে যানজটে পড়ে আছে, তাদের কাছে আমরা ক্ষমা চাই।’
অধ্যাপক মিহির লাল শাহ আরও বলেন, ‘এই সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি দাবি জানাই। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি মন্দিরে হামলার ঘটনায় ছাত্ররা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে যান চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।’