প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শাকিলা ও নয়নতারা পেলো নতুন ঠিকানা
মা-বাবাহারা শাকিলা ও নয়নতারা খুঁজে পেল নিজেদের নতুন ঠিকানা। ওই দুই তরুণী গত দুই বছর আগে সিলেট সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত শিশু পরিবার থেকে মৌলভীবাজারে এসেছে। এখানে শাকিলা ড্রাইভিং ও নয়নতারা টেইলারিং শিখছেন।
আজ বৃহস্পতিবার এই দুই তরুণীর জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর।
শাকিলা ও নয়নতারা কখনো ভাবেননি এখানেই তাঁরা তাঁদের নতুন ঠিকানার সন্ধান পাবেন। অবশেষে তাঁদের সেই চিন্তাভাবনা দূর হলো।
শাকিলা ও নয়নতারার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রচেষ্টায় সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বেড়ে ওঠা শাকিলা ও নয়নতারার জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
অভিভাবকহীন দুই মেয়ের অভিভাবক জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান নিজেই। শাকিলা ইসলামের বিয়ে হয় আল আমিনের সঙ্গে এবং নয়নতারার বিয়ে হয় মো. সাব্বিরের সঙ্গে। বর আল আমিন টিউবওয়েল মিস্ত্রি এবং সাব্বির সিএনজিচালিত আটোরিকশার চালক।
এই দুই নবদম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে প্রায় ৩০০ মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বুধবার রাতে তাদের জমকালো গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা রহমানসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তারা।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী ম্যানেজার এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এরা আমার মেয়ের মতো। তাদের বিয়েতে যাতে কোনো ধরনের কমতি না হয়, এজন্য সব আয়োজন করা হয়। দুই মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমার দুই কন্যার জন্য দোয়া করেছেন।’
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান আজ সন্ধ্যায় বলেন, একজন বাবা তাঁর কন্যাদের যেভাবে বিয়ে দেন, তেমনি এ কন্যাদের বাবা হিসেবে একজন কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার মতো আমরা তাদের বিয়ে দিচ্ছি। সব নিয়ম ও আনুষ্ঠানিকতায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো। কোনো জিনিসের কমতি ছিল না। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই নবদম্পতিকে এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে। তাদের খোঁজখবর সবসময় নেওয়া হবে।