ফরিদপুরে কুমার নদ তীরবর্তী এলাকায় ধস, ভাঙছে বাড়ি-রাস্তাঘাট
ফরিদপুর শহরে কুমার নদ তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৩০০ মিটার অংশে ধস দেখা দিয়েছে। গত শনিবার রাতে শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর এলাকার কুমার নদের তীরে থাকা কয়েকটি বসতঘর ও কবি জসীম উদদীন-চুনাঘাট বাইপাস সড়কের বেশ কিছু অংশ নদে বিলীন হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
এদিকে গত সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী মানববন্ধন করে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে।
ফরিদপুরের কুমার নদকে ‘জেলার অক্সিজেন’ আখ্যা দেওয়া হয়। পদ্মা নদীর শাখা এ নদটি পলিবেষ্টিত। যুগ যুগ ধরে এ নদে পলির কারণে নাব্যতা হারায়। বর্তমান সরকার নদটির নাব্যতা ফেরাতে ১৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। সে আলোকে গত বছর নদের কাজটি পায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এরপর তাদের কাছ থেকে কাজটি নেয় বেঙ্গল গ্রুপ। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় হাজি মোফাজ্জেল হোসেন নামের এক ঠিকাদার বেঙ্গল গ্রুপ থেকে সাব কাজটি নিয়ে গত অর্থ বছরে কাজ শুরু করে। ওই সময় কাজে অনিয়ম, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বিক্রিসহ নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে আজ এলাকার মানুষের বাড়িঘর ধসে গেছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
এদিকে, ধসের কারণে শহরের কবি জসীম উদদীনের বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর চুনাঘাটা বাইপাস সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী বিয়ষটি তদন্ত করে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়া পাশাপাশি তাদের বসবাসের সুব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন মো. ফিরোজ বলেন, ‘নদীর খননের পরে প্রভাশালীরা মাটি বিক্রি করার কারণে এই ক্ষতি হয়েছে। এখন কয়েকটি বাড়িঘর বিলীন হলো। সামনে শত শত বাড়িঘর বিলীন হওয়ার পথে রয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের উপপরিচালক সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বিষয়টি দেখেছি। মানুষের ক্ষতি লাঘবের জন্য আপাতত বামবু প্রজেক্ট হাতে নিয়ে কাজ শুরু করব।’
অপরদিকে, ঘটনা জানার পর ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তারা ওইসব পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।