বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়ক হতে পারে ভোগান্তির কারণ
আসন্ন ঈদে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়ক ভোগান্তির কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা। অন্যদিকে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ঈদযাত্রা আরামদায়ক হবে বলে মনে করছেন জেলা পুলিশ, সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর দিয়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের ২২ জেলার মানুষ চলাচল করে। প্রতি বছরই এই মহাসড়কে ঈদের আগের যানটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
এবার মহাসড়কে চার লেনের সড়ক নির্মাণকাজ চলমান থাকায় ভোগান্তির মাত্রা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই সড়কের ১৪টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ।
তবে জেলা পুলিশ, সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ্য স্থানে সংস্কারকাজ করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হবে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর নির্বিঘ্নে যাত্রীরা বাড়ি ফিরতে পারবেন।
সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনামিক কো-আপারেশন (সাসেক-২) প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনের উন্নীতকরণ কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকো পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশ পড়ে সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে। এই অংশের ১৪টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সড়কে সংস্কারকাজ করার কারণে চার লেনের মহাসড়কের কোনো কোনো স্থানে এক লেনে পরিণত হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়নি। যে কারণে ওই সব স্থানে যানবাহন চলাচল করছে ধীর গতিতে। আর এতে যান জটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহাসড়কের যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকো পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া টহল পুলিশ মহাসড়কে টহল অব্যাহত রাখবে। যানজট নিরসনে তারা কাজ করবে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ঈদের আগে যানবাহন চলাচল করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার। অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে মহাসড়কে চাপ সৃষ্টি হয়। সেতুতে টোল আদায় করতে সময় লাগে।
কেএইচ ট্রাভেলসের বাসচালক মুকুল হোসেন বলেন, ‘ঈদের আগে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। এবার সড়ক নির্মাণকাজ চলছে। বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। ঈদের আগে বাস চলাচল করে বেশি। এ কারণে যানজট হওয়ার আশঙ্কা করছি। ঝুঁকিপূর্ণ্য স্থান দ্রুত সংস্কার করা না হলে তীব্র যানজট হতে পারে।’
আরপি চ্যালেঞ্জারের বাসচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক নির্মাণকাজ চলমান থাকায় ঢাকা থেকে আসতে সময় লাগবে। বিশেষ করে সয়দাবাদ, মুলিবাড়ি, কড্ডারমোড়, নলকা, পাঁচলিয়া এলাকায় সড়কের কিছু কিছু স্থান ঝুঁকিপূর্ণ এগুলো ঈদের আগেই মেরামত করতে হবে। তা না হলে যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে।’
মহাসড়কে উন্নয়নকাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হেগো-মীর আক্তার জেভির প্রকল্পের ব্যবস্থাপক এখলাস উদ্দিন বলেন, ‘টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনের উন্নীতকরণ কাজ চলমান রয়েছে। সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। ২০ রমজানের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে নলকা সেতুর দুই লেন খুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি উড়াল সেতু ঈদের আগে খুলে দেওয়া হবে। আশা করি এবার ঈদে যানজট হবে না।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, মহাসড়কের ১৪টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সড়ক বিভাগ ও মহাসড়ক প্রকল্পের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ঝুঁকির্পণ স্থানে ২০ রমজানের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ হবে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ঈদযাত্রা আরামদায়ক হবে।