বন্যায় আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের পাশে নেই : গয়েশ্বর
আওয়ামী লীগ সরকার কখনো জনগণের ভালো চায় না মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনকল্যাণে কাজ না করে লুটপাটে ব্যস্ত। তারা বড় বড় মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতি করে জনগণের সম্পদ লুটপাট করছে। চলমান ভয়াবহ বন্যায়ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের পাশে নেই। বরং সিলেট যখন পানিতে ডুবছে তখন সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের নামে বিদেশি শিল্পী এনে নাচ গান করে জনগণের সাথে তামাশা করেছে।
সাবেক মন্ত্রী রিয়ার এডমিরাল (অব.) প্রয়াত মাহবুব আলী খানের মেয়ে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের পক্ষ থেকে আজ সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার এক হাজার বানভাসি পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ পূর্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই পুরোদমে ব্যর্থ এই সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। চলমান বন্যার পরে একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে এই লুটেরা বাকশালী সরকারের পতন ঘটানো হবে।
তিনি বলেন, ডা. জুবাইদা রহমান ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। উনার পূর্ব পুরুষরা যেভাবে দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন সেই ধারাবাহিকতায় তিনিও দেশবাসীর যেকোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই স্বৈরাচারী সরকার উনার নামেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের জনগণ একদিন এর দাঁতভাঙা জবাব দেবে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ সরকার হচ্ছে লুটপাট, ধর্ষণকারী, মুদ্রাপাচার, নারী ও শিশু পাচারকারীদের জন্য। মানুষ মানুষের জন্য- এই কথা বিশ্বাস করে বলেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা গত ১২ বছর ধরে সরকারের মামলা-হামলার শিকার, পুলিশের পয়সা (ঘুষ) জোগাড় করতে করতে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আপনারা পানিবন্দি আর আমার আপনার নেত্রী গৃহবন্দি। আমাদের নেতা তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারপরও সেখান থেকে দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভাবছেন, দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন, গণতন্ত্র ফেরাতে কাজ করছেন।
গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, আমরা যদি আমাদের নেতা তারেক রহমানকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে আমাদের আন্দোলন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তিনি যেখানেই থাকুক আমরা যদি তার নির্দেশনা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে এই সরকার থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ঘোষণা দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেই আগামীদিনে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এ সময় ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সিলেটবাসীকে বিএনপির পাশে থাকার আহ্বান জানান গয়েশ্বর।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী সাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর আহমদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী, বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. এনামুল হক চৌধুরী, ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, নিপুণ রায় চৌধুরী, বিলকিস ইসলাম, শেখ সুজাত মিয়া, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, কয়েস লোদী প্রমুখ।