বরিশালে অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেনের অভাবে রানু বেগম (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্বজনরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানান তাঁর ছেলে আল আমিন।
রোগীর স্বজন স্বপন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পলাশপুর নতুন ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা আ. জলিলের স্ত্রী রানু বেগম কয়েকদিন ধরে মাথাব্যথা ও জ্বরে ভুগছিলেন। এছাড়া তাঁর অ্যাজমা ছিল। এ কারণে প্রায়ই শ্বাসকষ্ট হতো। এতদিন জ্বর থাকলেও আজ সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। দুপুর ২টার দিকে তারা হাসপাতালে নিয়ে এলে করোনা ইউনিটে ভর্তি করাতে বলেন। সেখানে গেলে চিকিৎসক অক্সিজেন দিতে বলেন।’
স্বপনের দাবি, ‘অক্সিজেনের জন্য আমরা নিচতলার ওয়ার্ড মাস্টারের রুমে গেলে তিনি নার্সের রুমে পাঠান। নার্সের কাছে গেছে তিনি ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে পাঠান। ওয়ার্ড মাস্টার আমার কাছে সিলিন্ডারের জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেন। আমরা টাকা দিতে না চাইলে তিনি সিলিন্ডারও দেননি। টাকা না দেওয়ায় তিনি আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।’
রানু বেগমের ছেলে আল আমিন বলেন, ‘আম্মাকে নেওয়ার জন্য একটা ট্রলি আনতে গিয়েছি, আমার কাছে দেড়শ টাকা দাবি করেন। আমার মা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন। এখানে নিয়ে আসার পরে একজন চিকিৎসক, নার্স কেউ কাছে আসেনি। ছটফট করতে করতে অক্সিজেনের অভাবে আমার মা মারা গেছেন। চিকিৎসা পেলে আমার মা মারা যেত না।’
আরও দুই স্বজন জানান, অক্সিজেন দেওয়ার জন্য অক্সিজেনের মিটার কিনতে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে আমরাই অক্সিজেন পরিমাপের মেশিন কিনে আনি। তারপরও তারা অক্সিজেন দেন নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ গাফিলতিতে রানু বেগম মারা গেছেন। হাসপাতাল সরকারি হলেও টাকা ছাড়া এখানে কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে করোনা ওয়ার্ডের অভিযুক্ত ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর রহমান জানান, তিনি কোনো রোগীর স্বজনকে গালিগালাজ করেননি। তাছাড়া অক্সিজেনে দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই। অক্সিজেন দিয়ে থাকেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সরা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘করোনা ইউনিট থেকে অক্সিজেন দেওয়া হবে না এমন হওয়ার কথা নয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে স্টাফরা টাকা দাবি করবেন এটিও হওয়ার নয়। পুরো বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এর আগে এমন কখনো হয়নি। অন্য সব রোগীদের অক্সিজেন দিলে তাকে কেন হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন দেওয়া হবে না? বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি আসলে কী ঘটেছিল।’